বারাসাতের কাছে       একটি গ্রাম আছে
                কামদুনি নাম।
সকলেই খাটে            চাষ করে মাঠে
               গরীবের ধাম।
রাস্তার পাশে             কারখানা আছে
               নির্জন রাস্তা,
সেখানেই নিত্য           থাকে দূর্বৃত্ত
              মাতালের আস্তা।
নিত্য পথযাত্রী             বা কলেজ ছাত্রী
               সেই পথে যায়,
কখন কে আসে           সকলেই ত্রাসে
               ভয়ে পার হয়।
গ্রামেরই মেয়ে             কলেজেতে গিয়ে
               সেই পথে ফেরে,
কারখানার গেটে           মাতালেরা এঁটে
              ধরে তাকে ঘিরে,
পালাবার চেষ্টা             চিৎকার শেষটা
               বাঁচাও এ প্রাণ,
শয়তান গুলো             কামাগ্নীনুলো
               হরিলো সম্মান।
কে শুনিবে তাকে          কারখানার ফাঁকে
               অসুরের দল,
একলা সে মেয়ে           তেড়ে গেল ধেয়ে
              নিয়ে মনোবল।
আব্রুটা যাতে               থাকে কোনমতে
               হে ভগবান,
পাশে ছিল কাঠ            মারলো সপাট
               কোন এক শয়তান।
বুকে নিয়ে ব্যাথা           শেষ তার কথা
              ‘মা-গো’ বলে,
সজোরে মাথাতে           বাঁশের আঘাতে
             জ্ঞান গেল চলে।
শেষ সব ব্যাথা            নেই কোন কথা
              কহিল না আর,
মাতালেরা মিলে           গো-গ্রাসে গিলে
               করে অত্যাচার।


রচনাকালঃ ২৬/০৬/২০১৩


কবিতা প্রসঙ্গে :-
    গত 7 Jun 2013  নৃশংস অত্যাচারের শিকার হন কামদুনির এক কলেজছাত্রী৷  ধর্ষণের পর নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা৷
   ঘরের মেয়ের নির্মম পরিণতির জন্য প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বারাসতের অখ্যাত কামদুনি গ্রাম৷ঘটনার দশ দিন পর নির্যাতিতার বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখানেই তিনি আশ্বাস দেন ১৫ দিনের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে৷ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে এক মাসের মধ্যে৷ তারপর অনেক আন্দোলন হয়েছে৷ রাজনীতি হয়েছে৷ শাসকের চোখরাঙানি থেকে মোমবাতির আলোয় কামদুনির প্রতিবাদ দেখেছে গোটা রাজ্য তথা দেশ ৷ রাইসিনা হিলসে রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে গিয়েছে বিচারের আর্জি, কিন্তু, সুবিচার....আজও দূরঅস্ত৷
    এতদিন  পর আজও দোষী দুষ্কৃতীদের শাস্তির অপেক্ষায় গোটা কামদুনি৷ এখনও বিচার চলছে...৷  
    কিন্তু আজও আঁধার নামলে আতঙ্ক গ্রাস করে কামদুনিকে৷ রাত নামলেই কেন এই আতঙ্ক?

মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেই বহু পুরনো আপ্তবাক্য 'Justise delayed, justice denied'