বিদ্যে বোঝায় মাস্টারমশায়
ছাত্র পড়ান বটে।
আমারে কয় ‘বলতো দেখি,
ফুল কেন ফোটে?’
চুপটি করে থাকতে দেখে
বলেন ‘হারামজাদা-
সহজ উত্তর জানা নেই,
খাস তো নাদা-নাদা।
পূজো করবে বলে মানুষ
তাইতে ফোটে ফুল
তোদের জিজ্ঞেস করলে তোরা
সবই বলিস ভুল’।
মনে রেখো অনেক প্রকার
ফুল আছে দেশে,
গুনতে গেলে পারবে নাকো
পাগল হবে শেষে’।
খানিক ভেবে বলেন তিনি
‘বলতো ওরে ভুতো
বই খাতা না থাকলে তোদের
কেমন মজা হতো’?
একটু ভেবে ভুতো বলে
‘বলবো নাকি তাই?
বইখাতা না থাকলে স্যার
আপনি যেতেন কোথায়’?
আবার ভেবে বলেন তিনি
‘কিবা তোরা পারিস-
কেমন করে মানুষ মরে
তোরা কি তা জানিস’?
খেদি বলে ‘জানি স্যার
কেমন করে মরে
লেখাপড়া শিখে সবাই
গাড়ি চাপা পড়ে’।
খুশি হয়ে মাস্টারমশায়
ডাকেন ‘ওরে ভোলা-
বলতো দেখি নাকের ফুটো
কেন এমন খোলা’?
ভোলা বলে ‘পারবো না স্যার
আমার ধরুন অন্য...’
তাড়াতাড়ি হাদা বোলে
‘নাক ডাকানোর জন্য’।
খানিক পরে আবার বলেন
‘বলতো ওরে নুড়ো
কেন এত উচুঁ দেখি
আকাশের ওই চুড়ো’?
মাথা চুলকে নুড়ো বলে
‘বলছি তাহলে-
মাস্টার মশায় আপনি চোখে
চশমা পরেন ব’লে।‘
একটু হেসে বলেন আবার
‘বলতো দেখি হুলো
সারা মাথার চুল আমার
কেমন করে পাকলো?’
হুলো বলে ‘মাস্টার মশায়
পাকেনি তো চুল-'
হেসে হেসে বলে ‘আপনার
দেখার হয়েছে ভুল’।
রচনাকালঃ ০৮/০৭/১৯৯৮
বিঃদ্রঃ সুকুমার রায়-এর লেখা কবিতা আমার খুব প্রিয়। তার প্রতিটি কবিতা আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার এই কবিতা।
http://www.bangla-kobita.com/sukumar/sholo-anai-michhe/