(গদ্য কবিতা)

সাঁঝের বাতি নিভলো শরৎ হাওয়ায়


এক আকাশ স্বপ্ন চোখে নিয়ে এ বুকে মাথা রেখে
আলতো করে জরিয়ে ধরে বলেছিলে-
'যদি কাউকে কোনোদিন ভালো বেসেথাকি
সে একমাত্র তুমি, শুধু তুমি,
তোমাকে ছারা কোনদিন কাউকে ভালো বাসিনি আর ভাল বাসবোও না'।


সেদিন আমার চোখের কোন ভরেছিল জলে,
আর যাইহোক,আমাকে অন্তত একা ফেলে যাবার কোন সম্ভাবনা নেই,
বইতে হবেনা এ জীবনে নিঃসঙ্গতার কঠিন বোঝা,
থাকতে হবেনা একা,


ভালবাস প্রমান করতে হাজার বাঁধা কে করেছিলে জয়
প্রতিক্ষার প্রহর জমিয়ে জমিয়ে গড়েছিলে মস্ত বড় পাহাড়,
কাঁটা বন পেরিয়ে ভ্রমরের সাথে যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে
তুলে এনেছিলে
অর্ধ প্রস্ফুটিত সৌরভে মুখরিত  জল পদ্ম,
কেটেছিলে পঁচা শামুকে পা,
তবুও বুঝতে দাওনি তোমার শারীরিক যন্ত্রণা,
একগাল হেসে লাজুক চোখে লুকিয়ে রাখা অর্ধ প্রস্ফুটিত ফুল
সযত্নে উপহার দিয়ে বলেছিলে-
ভালবাসি,তোমাকে ভালবাসি,


আমার বুকে সেদিন উঠেছিল প্রবল ঝড়,
মনে হয়েছিল অপ্সরা আমি তোমার চাঁপা ফুলের বনে
নৃত্যের আন্দোলনে আন্দোলনে ঝড়িয়ে ফুল
গেঁথে মালা পরিয়ে দিই তোমার গলে
মনে হয়েছিল কোন মেঘলা আকাশের পেখম তোলা ময়ূর আমি
কেকা শব্দে ভরিয়ে তুলি তোমার ভালো বাসার আকাশ
আর নৃত্যে নৃত্যে ঝরিয়ে পুচ্ছ-পেখম সাজিয়ে তুলি তোমাকে
তুমিই আমার স্যাম
গোধূলী বেলায় তুলবে সুর বাঁশিতে
রাধা আমি কাখে কলসি
যমুনা যাওয়ার ছলে আশ্রয় নেব তোমার বুকে
বিলীন হব দুজনায় প্রহর যাবে থেমে
এক নদী কলঙ্ক মেখে হব তোমার কলঙ্কিনী
আর আমিও নির্লজ্জের মত  আকাশ-বাতাস,নদী-নালা,পাহাড়-পর্বত কে চিৎকার করে শোনাবো
ভালোবাসি,আমিও তোমাকে ভালোবাসি।


সে ভাষা আজ শব্দ হীন


মনের গহীনে জমে থাকা সমস্ত ব্যাথারা আজ শান্ত নদীর মত নিরব - স্থির - শিথিল
একাকীত্বের আদরে আদরে
আমি হেরে যেতে দেখেছি আমার আমিকে প্রতিটি মুহূর্তে
যে রক্তের প্রতিটি কণা বহন করতো তোমার নাম
সে রক্তের কণায় কণায় আমি দেখেছি ক্লান্তির অবশেষ
প্রতিটি রক্ত কনার খোলসে খোলসে জমেছ অজস্র ক্ষত,


সেদিনের সেই তুমি আজ আঙুল ছেরে অনেকটা পথ পেরিয়ে গেছ একা
অনুসরণ করিনি তোমায়,
শুধু তোমার প্রতিটি পায়ের ছাপে ছাপে
ধূলিকণার শরীর ভেদ করে চুপিসারে লিখে গেছি
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।