আমি তখন দশম শ্রেণীর,
চশমাটা তখনো আমাতে আবিষ্কার হয়নি।
শ্যাম্পু করার পরে চুলের জট ছাড়াতে
পাশের বাড়ির কাকিমার দ্বারস্থ হতাম।
মা ছিল নাতো তাই,
বাবার কাছে কখনো জানতে চাইনি।
একদিন পটল ভাজতে গিয়ে মুখে গরম তেল ছিটে এসেছিল,
চীৎকার শুনে বাবা ছুটে এসে আতুর করে কোলে তুলে নিয়েছিল,
কান্না ভেজা গলায় বলেছিল 'তোর মা বেঁচে থাকলে.....'
তারপর আর বলতে পারেনি।
প্রথম যখন অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হই
তখন একবার আমিও কেঁদেছিলাম।
তিন্নির মা ওকে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছিল।
আমার ভেজা চুলের বেনুনি টা আমি একাই বেঁধে নিতাম।
মায়ের একটা বিয়ের ছবি ছিল আমার পড়ার টেবিলে,
বৃষ্টি এলে বড় চিন্তা হত,
চালের ছিদ্র দিয়ে মা যদি ভিজে যায় বড় কষ্ট হবে।
মাকে আগলে রেখেছি অতি যত্নসহকারে।
আমি এখন স্নাতক,
বিকেলের আলতো বাতাসে
বেনুনিটা আজও একা ই বেঁধে নেই,
রান্না টা ও আমাকেই করতে হয়।
তেল ছিটে এলে এখন আর বাবা আমার কাছে ছুটে আসেনা,
জরিয়ে ধরে আর কোলে তুলে নেয়না।
বৃষ্টি এলে মায়ের মত বাবাকে নিয়েও বড় চিন্তা হয়।
বাবার ছবি টা ও যে দুমাস হল মায়ের পাশে জায়গা করে নিয়েছে।