শ্রাবণ শেষের বেলা.....
সূর্য কিরণ আড়াল করে ধবল মেঘের ভেলা ,
শিউলি গাছে সতেজতার প্রলেপ দিকে দিকে ,
ফুটবে যে ফুল ধরবে কুঁড়ি হাসবে মহা সুখে ।
যৌবনা ওই নদী খানি প্রবল বেগে ধায়......
দু ধারে তার পাড়ের সীমা দুলছে কাশ দোলায় ,
দিগন্ত জোড়া মেঠো পথের দু ধার ও নেই খালি....
আগমনীর বার্তা দিতে কাশের ঢলাঢলি ,
যেন দিগন্ত জুড়ে বিছিয়ে দেওয়া স্বচ্ছ পালক চাদর ,
বাতাস হতে দুলিয়ে অঙ্গ মাখছে সোহাগ - আদর ।
কলমি লতার ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে.....
আগমণীর বার্তা দিল মিঠেল গান শুনিয়ে ,
বার্তা দিল শর্ষে ফুলে,দিল কাশের গায়.......
কাশফুল সে উঠলো নেচে বিচিত্র দোলায় ,
নাচল বুঝি যৌবনা নদ, নাচল শ্রাবণ পবন.....
আগমনীর বার্তা পেয়ে নাচল বুঝি ভূবন ,
কিশোর মনে লাগলো দোলা কাশের পরশ পেয়ে ,
গরিব মায়ের ঝরল আঁখি রুক্ষ গাল বেয়ে ;
আগমনীর বার্তা যেন ভীষণ অভিশাপ ,
বেটা-মেয়ের বায়না যেন গরিব ঘরের পাপ ;
দু বেলার অন্ন জোটে দিন মজুরি করে ,
নতুন বস্ত্র কোথায় পাবে বেটা-মেয়ের তরে ?
বাঙালীর মহা উৎসব দশহাতি দূর্গার......
শিউলি হল প্রধান পুষ্প দেবীর চরণ আরাধনার ,
বাঙালীর প্রধান উৎসবে নতুন বস্ত্র পরিধানে....
গরিব মায়ের দিনযাপন চোখের জলের আবরণে ;
অন্ন জোটে দিবানিশি কর্ম করার ফল স্বরূপ.....
আধপেটা তে থাকার কারণ রুক্ষ আঁখি-রুক্ষ রূপ ।
শারদীয়ার আলোর ঝলক গরিব মায়ের বুকের মাঝে......
সন্তানের ওই চোখের জলে ব্যথার বাদ্য অগাধ বাজে ;
আগমনীর বার্তা দিতে কাশের দোলা যতই বাড়ে..... !
গরিব মায়ের নয়ন বারি ততই মহা সিন্ধু গড়ে।।