কষ্টের কি কোন ভাষা থাকতে নেই?
হঠাৎ এখানে এসে কেন স্তব্ধ হয়ে যাই বার বার?
কেন যন্ত্রণার দহন কণ্ঠ চেপে ধরে?
কেন ভুলে যাই বাংলা বর্ণমালাগুলো?
শোকের শব্দগুলো একে একে কোথায় হারিয়ে যায়?
না কি শোকের শীতলতায় জমে যায় বহমান অনুভূতির ভাষ্য?
আমি তবে ভাসবো কি করে, বাঁচবো কি করে?
আমার ভাষার ছোট নালাটুকু নদীতে পৌঁছবে কি করে?
এমন করে আমাদের একটা একটা নালা, একটা একটা খাল,
একটা একটা নির্ঝর প্রবাহ শোকে বরফ হয়ে গেলে
নদীর বক্ষে থাকবে শুধু - ধু ধু চর।
চরে শিয়াল আর হায়েনারা বাসা বাঁধবে।
মানুষের পা কেটে নিয়ে যাবে।
তাই আমি ভাবলাম,
যত কষ্টই হোক, আমার জন্যে বর্ষা কালই ভালো।
আমি বৃষ্টির ছন্দ শিখতে চাই।
আমি শিখতে চাই বজ্রের গর্জন।
আমি কালবোশেখির মত উদ্দাম নৃত্য করতে চাই,
শোকের শীতল ভাষা রপ্ত করে জমে যেতে চাই না।
আমার ভাষার নালায় বইয়ে দিতে চাই গতিময় অশান্ত স্রোত।
আমাদের একটা একটা নালা, একটা একটা খাল
একটা একটা নির্ঝর থেকে স্রোতের কোরাস গিয়ে
পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় জোয়ারের ফেনা তুলবে।
সেদিন- নদীর বালুচরে হায়েনার বসতি, শেয়ালের গর্তগুলো-
ভেসে যাবে।
ডুবে মরবে তাদের যত অভিশপ্ত বংশধর।
তারা আর মানুষের পা কেটে নিতে পারবে না।
***********************************
গতকাল শ্রদ্ধেয় আদৃত কবি'র লেখা 'দুঃস্বপ্ন' কবিতাটি আমার মনে গভীর রেখাপাত করে। তাঁর কবিতাখানি পড়ে আমার ভেতরে যে অনুভূতির সৃষ্টি হয় তার বহিঃপ্রকাশ এই কবিতাটি।
কবিতাটি ২০১৪ সালে লিখা।