মাগো! তোর কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারিনা আজ!
নিঃসংকোচ প্রাণে, কাব্যের কোন পংক্তিও আসে না
হায়েনার রক্ত চক্ষু তাড়া করে ফেরে, দিবা-নিশি
স্বপ্নের মাঝেও, জালিমের বুটের ঘা শাসিয়ে যায়
প্রতিহিংসার আগুনে আমি এখনো খুন হই, মা!

আমার রক্তস্রোতে ভেসে যায়, মাইলের পর মাইল!
কত বেয়োনেট-কামান-বুলেট পিঁছু নেয় উদগ্রভাবে
নৃশংসভাবে ঘুমের ঘোরে সিদ্ধ হই, কাটা মুরগীর মত
কেউ বসে বসে হরতাল, সন্ত্রাসবাদ ও হত্যাকান্ড গুনে
আর তুমুল প্রতিযোগিতা করে, এক চেয়ারের লোভে

বিজয় কি কাগজে-কলমে নথিবদ্ধ কোন ভূমি শাসন?
কত নবাব গেলো, পলাশী গেলো, ব্রিটিশ শাসন গেলো
মীরজাফরের দল এখনো বিদায় হয়নি মাতৃভূমি থেকে
নানা বাহানায় স্বার্থ বিক্রীত হয়, চেতনার ফেরী চলে
চারিদিকে শত্রুরাও, বন্ধু সেজে কুৎসিতভাবে হাসে

ফুটপাত এক্ষনেও আছে, পরম মমতার আশ্রয় বণে
অনাগত সন্তান আজও প্রাণ পায়না দ্রারিদ্রের নামে
রাজা যায়, কত রাজা আসে! কিন্তু ভাগ্যবদল হয়না
ঘুষ ছাড়া চলেনা একটিও ফাইল; এমনকি বার্ধ্যকেও!
ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ উসকে দেয়, স্বার্থান্বেষী মহল

একমুঠো খাবারের জন্য আজও খুন হতে হয়, মা!
ছেঁড়া কাপড়ের ফাঁক গলে, মানবতা অট্টহাসি দেয়
এখনো শীতে কাঁপি থরথর করে, মারাও যাই কত!
আসমানীর ভেন্না পাতার বাসার মতই নড়বড়ে ঘর
দুঃখে, আকাশ দাঁত কেলিয়ে হাসে; আবার কাঁদেও!

মাগো! এখন আমায় নৈরাশ্যবাদী বলে বসোনা!
আমি আশাবাদী ছিলাম, আছি এবং সদা থাকবো
ঠুনকো আশার বুলি কপচালেই আশা হয় না, মা!
ও মা! আমি মিথ্যার আশ্বাস আর চাইনা! না! না!
আমি পূর্ণ বিশ্বাস চাই! বুকভরা সাহসের বর্ম চাই!

বলবে কি, আগুনে পুড়ে সোনাকে খাঁটি হতে হয়?
না মা! আমি যে, পুড়তে পুড়তে অঙ্গার হয়ে গেছি!
বুকচিরে দেখো, একফোটাঁ রক্ত ও অবশিষ্ট নেই!
আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ভয়কে সাথী করে
যৌবন ও বুঝি পার হবে, তুষের আগুনে জ্বলে জ্বলে!

আর না! আমি হাজারো খান জাহান আলী চাই, মা!
তিতুমীরের সত্যান্বেষী বাঁশের কেল্লা গড়বো আবারো
হাজী শরীয়ত উল্লাহর তাকবীর-হুংকার ছড়াবো গগনে
প্রশান্তি চাই! অবাধে বিচরন চাই স্ব-ভূমিতে, বীরদর্পে
শিশুশ্রম-পন্ডশ্রমে, প্রহর কাটাতে চাইনা একমূহূর্তও!

____________________________
রচনাকালঃ ১৪.১২.২০১৩ ঈসায়ী

[ আমার সকল রচনাবলী (ইসলামিক কবিতা ও অন্যান্য) আমার ব্যাক্তিগত ব্লগ www.tanin87.blog.com এ ইনশাআল্লাহ্‌ যেকোন সময় পাবেন ]