কবরের মাটির সাথে আঁধারে
ঘুম গেছে মিশে ; মায়ের আঁচলের সেই নরম আদর
চুরি হয়ে যায় যন্ত্রের চাকার প্রতি আবর্তনে ।
এই পৃথিবীর ‘পরে যে বহ্নিঝরা জীবন
তুমি কি জানো না তা ?  বুঝি পাওনি তার স্বাদ !
যে সব হৃদয়ে বেজেছে শুধু ঝরাপাতার মর্মর ধ্বনি
সে সব হৃদয়ের পোড়া গন্ধ কেউ ভালোবাসে না আজ ।
কুয়াশামাখা স্মৃতিসৌধ হতে যে সব  মুখ তুলে আনি ,
সে সব আপন চেনা মুখ ফিরে যায় কথা না কয়ে
                            --শুধু দীর্ঘ অবসাদ রেখে ।
তাই ক্ষণে ক্ষণে জমা অন্তরের নিরুদ্ধ বেদনা
ঝরে পড়ে সাদা পাতা জুড়ে অশ্রুত কাব্য হয়ে ।
জীবন যৌবন আর শরীরের প্রণয়বাসনা আজ বিলীন হয়
রাত্রির পাতা হতে চূঁয়েপড়া শিশিরের মতো ।

তাই
নতজানু হয়ে ঠেকিয়ে মাথা তোমাদের সব দেবতার দ্বারে
মানুষের পৃথিবীতে আজ মানুষ খুঁজি ; শুধু দেখি
চিতাভস্ম ওড়ে সিন্ধুর পাড়ে ; নগরের বাতাসে
                         পচা মাংসের গন্ধ ভাসে ।
যে জননীর বুকে বসে করেছো মহাযজ্ঞের সাধনা ;
তবু কি পেরেছো ? আকাশের বিজলীরে ধরতে
তবু কি পেরেছো ? জলের রঙ দিতে ; পারোনি
                           একখন্ড মাটিও বানাতে ।
জানি এক্ষণে আসবে না দধীচি আপন বুকের হাড় দিতে
শুধু করেছো আপন হদয়ের ক্ষয় !
সেই বোধ পড়েছে চাপা
          প্রাসাদের নীচে ;
যেই বোধ থাকলে বুঝতে   -হৃদয়ের অবসাদ  ;
                   আজ কেন পৃথিবীর মুখ ভার ?