পাণ্ডব পরাভব দেখি কৃষ্ণা সুদায়--
"কেন হয় সখা সৎ এর পরাজয় ?
কেন অধর্মী সদা বিজয়প্রাপ্ত হয় ?
ধার্মিকেরা কেন কেবলই দুখ সয় ?"
শুনি সখীর বাণী, হাসে মধুসূদন
কহিলেন প্রিয়া মোর, শোনো দিয়া মন-
"কোনো কিছু প্রাপ্ত হইলে ঘটে না জয় |
প্রারম্ভে ব্যর্থতাও নয়কো পরাজয় |
সকল কিছুই ফল সময়ের মাত্র
অজ্ঞানীরা চিন্তা করে সদা অহোরাত্র |
মনে রেখো এ সকল কালের প্রভাব
বৈকল্পিক হইলো সময়ের স্বভাব ||"
"দ্যূত সভায় যে সকল ঘটিল ভণ্ড
দায়ী সকল অধর্মী পাবে নিজ দণ্ড |"
"ধর্মজ্ঞানী ভীষ্ম চুপ করিয়া রইল
স্ব-প্রতিজ্ঞা রক্ষার্থে ধর্মচ্যুত হইল |
গুরু দ্রোণ মহাজ্ঞানী রইল নিশ্চুপ
পুত্র মোহে কাতর শক্তিহীন সরূপ |
অধর্মের পাশার তারা রইল সাক্ষে
পাঞ্চালির অপমান দেখিলো স্বচক্ষে ||
মতিভ্রমে মহারথীও কুবাক্য কয়
মেদিনীর ঋণ চুকিবে সেও নিশ্চয় ||"
"যদি কোনো কার্যে মানব ভয়ার্ত রয়
সেইক্ষনেই তাহার ঘটে পরাজয় |
যে মনুষ্য সর্বচুত্য হইয়াও শান্ত
সংসারে বাস করে যেন এক সন্ত |
সময়ে রূপান্তর আসিবে অবশ্যই
অধর্মের বিনাশ ঘটিবে নিশ্চয়ই ||"
"চিত্তের ভয় দূর কর, ঘুচি আঁধার
দীপ্তিমানে জ্বালি রাখো নেত্রের বাহার |
ধর্মকে ধারণ করি যে জন এগিবে
ধর্মই তার সদা রক্ষাকর্তা হইবে ||"
"তাই বলি প্রিয় মোর নাই চিন্ত আর
সখা প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় কর এবার |
এ অজেয় বীরের প্রস্থানস্থল নয়
এ হইলো পাণ্ডবের বিজয়সূচয় ||"
"ধৈর্য ধর, কষ্ট কর - মোর এ আদেশ
ভবিতব্য লিখিত আছে তোমা স্বদেশ |
পুন: ধরণীতে ধর্মের ধ্বজা উড়িবে
নবানন্দে ধরার জীব সব জুড়িবে |
তাই বলি সখী মোর নাহি চিন্তা কর
পাণ্ডবে বনযাত্রা আশিস রূপে ধর ||"