জানকীরে জিহীর্ষা লাগি আসিল দশগ্রীব
তাড়কা সুত হইল তাহার ঐন্দ্রজালিক |
স্বর্ণমৃগ রূপ তব মায়াবী ধরিল
মৈথিলীরে মোহ জালে আবৃত করিল ||
রঘুনন্দন নিজ প্রিয়ার ইচ্ছা রক্ষিতে
পিছু নিলো মায়াধারীর মায়া ভঙ্গিতে |
অনুজের দিয়া গেল নির্ভর আদেশ;
''বৈদেহীরে সুরক্ষা দিও, রক্ষা করো, বেশ ||''
রাঘব কণ্ঠ ধরি মায়াবী দুরাচারী,
"হা সীতে, হা লক্ষ্মণ" ডাক দিল ছারি |
রাম কণ্ঠ শুনি রামা ভয়ার্ত হইল
দেবরেরে তৎকাল বিপদ আভাস দিল ||
রামানুজের অতি বিশ্বাস আছে রঘুবীরে
মাতারে বুঝাইলো সে যেন ধৈর্য ধরে |
এতক্ষণে জানকী কটু বাক্য কহিল
সৌমিত্রের স্বভিমানে তা দংশন করিল ||
বলশালী লক্ষ্মণ, ধরিল ধনুক একখানি
মন্ত্রবলে সিদ্ধ করি দাগ দিল টানি |
অনিচ্ছাতে ও লক্ষ্মণ কাননে গেল চলি
তার আগে সীতারে গেল ইহা বলি:
"কোনো মতে, মাতা এ গণ্ডি ত্যাগ না করিবে
নিরাপদে সুরক্ষিত সদা কুটিরে থাকিবে |
কেন জানি মনে মোর কুবাক্য কয়
মোর বিনে তোমা না, যেন ক্ষতি হয় ||
যেইমাত্র লক্ষ্মণ কাননে গেল চলে
দশানন হাজির হইল সন্ন্যাসীর ছলে |
ভিক্ষা নেওয়ার ছলে করে সম্ভাষণ
নিজ শব্দ বাণে বিঁধিল জানকীর মন ||
"সন্ন্যাসীর অভক্তি ! এত সাহস তোর !
ভিক্ষা দিবি কুটির হতে, অস্পৃশ্য ভাবিস মোর |
তোর পতির অবশ্যই মহা ক্ষতি হবে
শত্রু নিশ্চয়ই তার প্রাণ বধিবে ||
পতি অমঙ্গল শুনি সতীর সহ্য নাহি আর
বাহির হইলো ভেদিয়া লক্ষ্মণের দ্বার |
যেই মাত্র জানকী রেখা বাহির হইলো,
কপটি নিজ স্বরূপ প্রকাশ করিল;
"দেখ মোরে সুন্দরী, আমি দশানন
ত্রিলোকের স্বামী আমি, আমিই ভুবন |
সুন্দর সবই মোর নেয় সদা স্মরণ
এখন তোমারে আমি করিব হরণ ||"