মীরা আজ আর রং খেলে না !
কেউ কি জানে, কেন এমন করে সে ?
মীরা আজ আর গৃহ-বাহির হয় না
নিভৃতে এককোণে লুকায়ে রয় যে ।
গত বছরের তপ্ত স্মৃতি করেছে তার ঘুম
বসন্তের আগমনেও তাই, আজ সে নিঝুম ।
রঙিন স্বপ্নে মাতোয়ারা সারা ভুবন রঙিন
মীরার জীবনের রংয়ের তুলি, আজ বর্ণহীন !
শিমুল পলাশের পরশে ভুবন ভাসে সুবাসে
মীরা তবুও বঞ্চিত, আছে শুধুই বিষাদে ।।
মীরা আজ আর রং খেলে না !
ভুলে গেছে রংয়ের সব ছটা সে
মীরা আজ আর গৃহ-বাহির হয় না !
স্বপ্নবিহীন আঁখি জাগে দীর্ঘ রজনীতে ।
হয়তো বা সে, বসন্তের কোন এক ফুল
ভ্রমর করেছে যার গোপনে রাখা মুকুল ।
হয়তো বা সে, কোন এক সরস নদী
সাগর এগিয়ে এসে স্তব্ধ করেছে যার গতি ।
হয়তো বা সে, গৌতম জায়া অহল্যার ন্যায়
পুরন্দরের নিঠুর কামে পাথর হয়ে রয় ।।
মীরা আজ আর রং খেলে না !
চির বিধবার মতো বেশে রয় সে
মীরা আজ আর গৃহ-বাহির হয় না !
ভীত সে, সমাজের চোখ রাঙানিতে ।
কিবা দোষ তার ভেবে ফেরে হায় !
দিবাকরের তেজে, শশীও তো লুকায় ।
কিবা দোষ তার চিন্তা সদাই ধায়
কাম-পৌরুষ হায় ! কামিনী সম্ভ্রম খায় ।
কিবা দোষে অন্যের পাপ বয়ে চলা-
এ সমাজ হায় ! দেয় শুধুই বিষ-জ্বালা ।।
মীরা আজও রং খেলে না !
কারণ লুট হয়েছে তার কৌস্তুভ যে
মীরা আজও গৃহ-বাহির হয় না !
তবুও, বসন্ত কি পারে না তাকে রাঙিয়ে দিতে ?