জগৎ বাগিচায় প্রভু করেছে সৃষ্টি
শত শতাধিক কত মুকুল সুমিষ্টি |
আষাঢ়ে ভাসিয়ে তারা, ডুবিয়েছে কূল
মনস্তাপ বুকে লয়ে, অতৃপ্ত ব্যাকুল |
তাহারি মাঝে ছিল এক স্বপ্নসুন্দরী
যৌবন কুঞ্জে যাহার এসেছে বাহারি ||
আবৃত রয়েছে কান্তা, হইয়া সৃঞ্চন
প্রেয়সী রূপিণী সে নবরূপে কাঞ্চন |
হৃদয়ে কামনা হইবার তরে পূর্ণ
মধুকরের সোহাগে হইবে সে ধন্য |
মেলিয়া ধরিতে চায় কামাতু প্রভাস
প্রিয়বর এসে যেথা করিবে বিলাস ||
নব অনুরাগে যেন, নববধূ জাগে
ভাসাতে চায় যৌবন, সুর-ছন্দ-রাগে |
অদৃষ্টেরে দিয়া থাকে সদা দোষারোপ
ডুবুরি কি আসিবে না ডুবিতে স্বরূপ |
স্রষ্টা হাসিয়া ভাবে,“হইবি তুই পণ্য
প্রেমজ্বালা জুড়ালে হইবি অবসন্ন ||
সময়ের আগে তোর বসন্তের ইচ্ছা
নশ্বর কামধেনুতে এত তোর লিপ্সা |
উন্মত্ত চিত্ত তোর হইলে ছারখার
ভুলিবি অহং তনু, অহং আকার |''
এই বলি জীবিতেশ তৃণ নিল তুলে
মধুলোহী পাঠালো জিহীর্ষারে সমূলে ||
নিশিকালে শিলীমুখ চুপিচুপি এল
কামাতুর প্রেয়সীরে সম্পূর্ণ লোভিল |
পাপড়ি তাহার দস্যু, করিল উন্মুক্ত
লজ্জা ছিনিলো তাহার, করিল আরক্ত |
প্রভাতে যখন তস্কর ছাড়িল শয্যা
কলঙ্কিনী প্রণয়িনী বুঝিল সে বজ্জা ||
যদবিধি ছিল তরু অটুট যৌবন
প্রভু তার পাশে ছিল, ছিল তপবন |
আজ যখন হারায়েছে নিজ সম্ভম
প্রভুরে সে হারায়েছে, কাটিয়েছে ভ্রম |
মনে ভাবে, নিজ কি অনিষ্ট করিলাম
অনিত্যরে লোভিতে, নিত্যরে হারিলাম ||