সিমি" ১০
তালেমুল ইসলাম
আমি শুয়ে আছি শায়িত কবরের ভাজে,
কে যেন ডেকে যায়, বলে যায় পড়ে আছে
কৌতুহলী আধখানা চিঠি শায়িত কবরের পাশে
আমি উঠিতে পারি না জাগিতে পারি না
পড়িতে পারি না সে আধখানা চিঠি।
আর্তনাদে লুসিফারের মত চিৎকার করি,
কে জমালো কবর বুকে আধখানা চিঠি!
কি আছে সে চিঠির ভেতরে? কে দিল সে চিঠি?
তবে কি আমার প্রিয়তমা আমায় ছেড়ে যায় নি
আমায় ভুলে নি আজো?
কে হতে পারে সে আধখানা চিঠির লেখক?
সে তো বীলিন অপ্রতিরোধ্য কিশোরী,
আমার ভাবনায় যার আনাগোনা অবশ্যম্ভাবী।
সে কি আমায় মনে রাখবে?
আমি তো অভাবি প্রেমিক, কবরেও ঠিক তাই,
কবর পাশে আজ আমার নিকট কোন প্রিয় প্রতিবেশি নাই, এ যেন ভয়ংকরী ব্যাপার।
তুমি কৃষ্ণচুড়া আমি দেখিছি তোমায় বসন্তে,
তোমার রাগান্বিত গ্রেস, সাজে হিমালয় বেশ।
তুমি ধ্বংস তুমি সৃষ্টি তুমি লগ্ন তুমি প্রহর,
তুমি অপেক্ষা তুমি ৬ ঋতু তুমি চাঁদ,
তুমি বায়ু তুৃমি ৮ গ্রহ তুমি নক্ষত্র সন্ধান সূর্য,
তুমি চাতকিনী তুমি আমায় করো নিঃশেষ,
তুমি সোলমেট তুমি অক্সিজেন,
তুমি কার্বনডাই-অক্সাইড।
তুমি রোদ্দ্র রোদের ঢেউ,
মেঘের ভেলায় সজ্জিত বৃষ্টি,
তুমি নিশাচরী তুমি হরিণী
তুমি সিংহ মানবী, তুমি আকাঁবাকা নদী
তুমি সমুদ্র তুমি গর্জিত সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ,
তুমি নাবিকের হাহাকারে গড়া মৃত্যু,
তুমি ব্যাথা তুমি বিষাদ তুমি আরাম ৩৬৫ দিন,
তুমি স্বপ্ন নিদ্রা অঢেল ভাবনা,
তুমি পাহাড় বন জঙ্গলে
ঘুরে বেড়ানো প্রজাপতি
তুমি ফুল দিয়ে মোড়ানো
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চাদর,
আবহাওয়ার প্রতিকূলতা
তুমি নাতিশীতোষ্ণ।
তুমি আমার গড়া সব শুভ অনুভুতি।
তুমি কৃষ্ণচুড়া বলেছিলে কবিতা হারাতে চাও না
আমি কথা দিয়েছিলাম আমি হারালে হারাবে
কবিতা! দেখো আমি হারাই নি আজ-ও!
আমি বলেছিলাম মৃত্যুর পরে আমার কবর
জিয়ারত করে যেও, হয়ত তুমি এসেছো
তাই বুঝি আজ মৃত্যুর পরে হঠাৎ এত
আরামদায়ক অনুভুতিতে আমি সিক্ত।
তুমিময় উপস্থিতিতে কবরেও আমি সুখ পাচ্ছি!
তোমার উপস্থিতি সেই "আধখানা চিঠি"।
আমার কথা স্বরণ সেই "আধখানা চিঠি"
আমারদের কথপোকথন আমাদের
জমানো সৃতি সেই "আধখানা চিঠি।