আমি গরীব,
তবুও আমি সুখি,
গরীব হবারও সুখ আছে, বড় সুখ।
আমি পারি, প্রখর উত্তাপে বিনা বস্ত্রে
সারাদিন কাটাতে।
আমি পারি যখন খুশি চায়ের দোকানে
আড্ডা দিতে।
পারি বর্ষার ক্ষনে মাঠ প্রান্তরে
উলঙ্গ হয়ে ভিজতে।
আমি পারি রাখাল সেজে
গাভীদের সাথে থাকতে,
পারি গোয়াল ঘরে ঘুমোতে।
এতে আমার ঘৃনা লাগে না
কারন আমি গরীব।
আর এ আমার গরীব হবার সুখ।
হে বন্ধু আমি গরীব,
এ জিবন মোর বেদনায় ভরা।
তবু এর মাঝেও আছে সুখ।
জন্মের পর থেকে শিখেছি করতে ত্যাগ
তাই যত কিছুই হারাই
লাগে না কোনো ছ্যাক্।
না পাইতে পাইতে হয়েছে অভ্যাস,
তাই না পেয়ে তোমার মত, করি না হা-হুতাশ
এ কি সুখ নয় !
এ সবচেয়ে বড় সুখ।
আমি পারি এক মুঠো সাদা ভাতের সাথে
পেঁয়াজ , কাঁচা মরিচ দিয়ে খেতে
এতে আমার জাত যায় না।
কারন আমি গরীব,
আমি মূর্খ অশিক্ষিত।
আমার কথার কোনো দাম নেই
তাই আমি পারি যা খুশি তা বলতে,
আমার কথায় কেও পাত্তা দেয় না
কারো কিছু যায় আসে না।
তাই বাক স্বাধীনতা মোর সবচেয়ে বেশী
যা আপনাদের শিক্ষিতের নেই।
কেও অবাক হয় না, প্রশ্ন করে না
তাকিয়ে থাকে না ।
কারন আমি গরীব, তাই পারি।
আপনারা কি পারবেন ?
পারবেন না।
আপনাদের সেই সুখ নেই,
আমার আছে, কারন আমি গরীব।
আমরা ছোট বলেই
আজ তোমরা হয়েছো এত বড়,
মোদের শীরে পদ রেখেই তোমরা চন্দ্র ধরো,
আমার চাওয়া ছোট,
আমার আশা ছোট।
আমি বড় বড় স্বপ্ন দেখি না,.
তাই যা পাই, লাগে বড় বেশি,
ভরাতে পারি মন, ফুলে ওঠে বুক
তাই আসিলে নিরাশা, বড়লোকদের মত ছটফট করে নির্ঘুম রাত জাগি না
এ কি সুখ নয়! এ অনেক বড় সুখ।
আমি গরীব , আমি অচেনা পথের পথিক
আমি কবি , আমি রাখাল আমি সাহিত্যিক
আমি নিজেই নিজের দিশা গড়ি,
ভাগ্য কে করি ধীক।
আমি করি না কো কিছু পরোয়া,
আমি স্বাধীন, আমি দুর্বার, আমি উত্তাল
আমি নির্ভীক।
আমি সইতে পারি পরাজয়
কোথাও পাই না কোনো ভয়
আমি পারি মার খেয়ে মার হজম করতে
পারবেন কি আপনারা তা করতে
এ কি সুখ নয়! এ আমার বড় সুখ,
গরীব হবার সুখ।
আমি গরীব আমি মূর্খ
কিন্তু আমার দুটো হাত আছে,
দুটো পা আছে, আমি কঠোর মেহেনত করি,
আমি মাটি থেকে সোনা ফলাই,
এ সোনা, তোমাদের অর্ধাঙ্গীনির অর্নেমেন্টের
চাইতেও দামি, এ সোনা আমার গর্ব,
অশিক্ষিত হয়েও তোমাদের শিক্ষিতদের মত
আমিও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখি।
এ আমার গর্ব। এ আমার অহঙ্কার।
এ কি সুখ নয় !, এ আমার বড় সুখ।
গরীব হবারও সুখ আছে, অনেক বড় সুখ।
১১ আগস্ট, ২০১৮
দুপুর ১ টা ৩৯ মি
যাত্রা পথে লেখা