হঠাৎ একদিন কাজের ফাকে,
গা টা কেমন জানি অসস্থি লাগে।
বাসায় এসে বললাম গিন্নিকে,
জ্বর জ্বর ভাব, মাথাটা কেমন জানি লাগছে।
রাত্রি তিনটে বাজে,
জ্বর-কাশি জাপ্টে ধরেছে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে,
ঘরের থার্মোমিটারটা বগলে চাপিয়ে মেপে দেখি
তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ঊঠে গেছে।
গিন্নি মাথায় পানি ডেলে, জলপট্টি দিয়ে
সারারাত্রি জেগে করেছে সেবা,
বিরবিরি করে রাতেই বলেছে,
সকালে হাসপাতালে করোনা টেস্টের লাগি যাবা।
করোনা নামটা শুনেই দেহটা হয়ে গেল ভার,
এই ভাইরাস বুজি আর আমাকে দিবে না নিস্তার।
জীবনের মাত্র তিরিশটি বছর করিলাম পার
নতুন বউ আর দুইটা ছোট বাবু নিয়ে
কেবল গড়িলাম সুখের সংসার।
এত তাড়াতাড়ি পিতামাতা-হাজারো স্বজন রাখিয়া,
চলে যেতে হবে ঊপার?
বিনিদ্র রজনী ভেবে ভেবে নয়ন জলে ভেসে,
রাত্রিটা কেটে গেল ছেলে-মেয়ে দুইটার মুখখানি দেখে।
চোখের জল ফেলিয়া ছেলেটা কেদে কয়,
আমিও মরে যাব বাবা তোমার যদি কিছু হয়।
গিন্নির ফুলা ফুলা চোখের দিকে তাকিয়ে ভাবি,
মা-বাবা-ভাই-বোন কত না কান্না করিতেছে গ্রামের বাড়ি।
আল্লাহর নিকট দুহাত তুলিয়া দুয়া করিতেছি হে দয়াময়,
তুমি আমার একমাত্র ভরসা, দেখো আমার যেন কিছু না হয়।
কল্পনায় ভাবি, এই বুজি গলাটা ব্যাথায় হয়ে গেল ভার,
শুরু হবে শ্বাস-কস্ট।
কোথাও হয়ত স্বাস্থ্যবিধি না মানাতে জীবনটা হল নষ্ট।
রিপোর্টটা হাতে নিয়ে দেখি পজিটিভ আসে নাই,
মহান আল্লাহর শুকর করিয়া ভাবিলাম,
এ দেহে তাহলে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ত নাই,
যত ভাইরাস ছিল সব সময়ের কল্পনায়।