চতুর্দিকে ধোয়াচ্ছন্ন
বাতাসে পোড়া গন্ধ।
রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে
পুরনো দেয়ালে পিঠ ঠেকে
বেয়নেট উঁচিয়ে
নিশানা খোঁজে আমারই
রক্তিম চক্ষু।
মাত্র গজ বিশেক সামনে,
মুক্ত আন্দোলনের মিছিল।
বায়ান্নে রক্তে কেনা বাংলায়,
গর্জে ওঠে তাদের যৌক্তিক দাবি।
পশ্চাতে পেশাদার কমান্ড,
বুকে লালিত শপথ।
আমাকে ভুলিয়ে দেয়,
ওরা আমার ভাই, ওরা যৌক্তিক।
ওরা আমার রক্ত, তাঁরাও সঠিক।
মানবিক হই, সতর্ক করি,
আইন মেনে মায়ের কোলে যাও ফিরি।
কিন্তু ওরা আবুঝ, অনড় ও বড্ড জেদি,
দাবি আনাদায়ে ফিরিবে না বাড়ি।
হঠাৎ মিছিলের ঢুকিল দুষ্কৃতকারী
আগ্নেয়গিরির মতোই চারিদিকে
মনুষ্য হত্যায় মাতিয়ে তুলিল
আমি কি চুপ থাকিতে পারি?
আমিও নাছোড়বান্দা পেশাদারী,
কালো শক্তি নিষ্ক্রিয় করিতে
বাধ্য হয়ে চালিয়েছি গুলি।
রাত্রিতে রুমে ফিরি,
বালিশের নিচে রেখে যাওয়া ফোনটি
শত-শত মিসড কল দেখে কল দিতেই
কাপিয়া ওঠিল বুকটি।
আমারই বুলেটের আঘাতে
ঝাঝড়া হয়ে বিদির্ন হয়েছে
স্নেহের অনুজের বুকটি।
মায়ের আহাজারিতে নয়ন জলে
ভেসেছে হাজারো পুরুষ নারী।
বাবার বুক ফাটা আর্তনাদে
আকাশ হয়েছিল ভারী।
অসহায়, অভাগা বাকরুদ্ধ আমি
নির্বিকার অপলক চেয়ে রই।
পেশাতেই তোকে গড়িয়েছি আমি।
লাল-সবুজ রক্ষায় ভ্রাতৃখুনের দায়ে
মায়ের কাছে আমার নতুন পরিচয়
আমিই কি পেশাদার খুনী?