আমি রবীঠাকুর হতে চাই না
নোবেল’এর ভারে ন্যুব্জিতে আত্মসত্তায়।
আমি কাজী নজরুল হতে চাই না
কারাবাসী হতে ‘দ্রোহী’ লকব গলায়।
আমি জসীমউদ্দিন হতে চাই না
রচতে পল্লীর শোক আর স্মৃতিগাঁথা।
আমি ফররুখ আহমদ হতে চাই না
মানবমনে জাগাতে মুসলিম রেনেসাঁ।
আমি বন্দে আলী মিঞা হতে চাই না
গাঙের চরে গাড়তে জীবনের নোঙর।
আমি জীবনানন্দ হতে চাই না
চিল-শালিকের বেশে ফিরতে বাংলার ’পর।
আমি সুকান্ত হতে চাই না
বিশ্বকে করতে শিশুর বাসযোগ্য।
আমি সুফিয়া কামাল হতে চাই না
নারীকে জাগাতে আদায়ে তার অধিকার-প্রাপ্য।
আমি আবু হেনা মোস্তফা কামাল হতে চাই না
শতাব্দি শতাব্দিতে হতে আবির্ভূত।
আমি শামসুর রাহমান হতে চাই না
পাড়াতলীর বদলে হতে শহুরে কবির সনদপ্রাপ্ত।
আমি আল মাহমুদ হতে চাই না
‘মৌলবাদী’ অভিধা তলে হারাতে আপন প্রতিভা।
আমি মহাদেব সাহা হতে চাই না
অগ্নি-জল-পুষ্প-পবনের গৃহিতে অর্চনা ।
আমি হতে চাই ছোট্ট কোনো পাখি
বাংলার পাখি
গেয়ে যেতে বাংলার গান, বাংলায় গান
বিশ্বের প্রতিটি ঘরে;
আমার বাঙাল-স্বজনরা যেথা গুমরে মরে।
আমার গানে জাগাতে চাই
‘আত্মপরিচয়-বোধ’;
যে বোধ শিরদাঁড়া করে সোজা, শির করে উঁচু
না... না...! এ নয় যে শিশুর প্রবোধ!
যদি জানো-
বাংলার গর্ব, বাংলার কৃষ্টি, বাংলার গোটা ইতিহাস
আর মানো তারে স্বচ্ছপ্রাণে
একদিন তবে তুমিও যে হবে ইতিহাস।