চৈত্র যাচ্ছে বৈশাখ আসছে আসছে নূতন বছর,
গ্রামীণজনের বুকের মাঝে শঙ্কা করছে ভর।
বাঁশ কিনেছে কিংবা কেটেছে ঝাড় থেকে অনেক,
ঘরের 'পালা' বদলাতে যে ব্যস্ত দিন যায় কয়েক।
কাল-বৈশাখী হানলে আঘাত উড়িয়ে নেবে চাল,
ছেলেপুলে-বউ নিয়ে যে অবস্থা হবে বেহাল।
তবু একদিন বায়ূ কোণ সাজে কালচে সাঝে,
বিজলী বাতি ঝলকে ওঠে কাল ভৈরবী বাজে।
তারপরে সে আছড়ে পড়ে গরীর-ঘরের গায়,
হল্লা করে বজ্রনাদে ঘরখানি সে গুড়ায়।
ভাঙ্গে গাছ কিংবা ফেলে উপড়ে তার মূল,
পাগলা হাওয়া নাচে যেন পথভোলা বেভুল।
কখনওবা হালের বলদ চাপা দিয়ে মারে,
দিশেহারা কৃষক যায় মূর্ছা বারে-বারে।
খোলা আকাশ হাতছানিতে কান্নায় ভাসায় বুক,
আল্লাহ ছাড়া দেখবে কে আর গরীবের এ দুখ!
রাত পোহালেই নামতে যে হয় জীবন যুদ্ধে তার,
ঘরখানা যে সারতে হবে গুঁজতে মাথা আবার।
পাড়া-পড়শিও এগিয়ে আসে হাত বাড়াতে কাজে,
এই করেই গ্রামীণ মানুষ বাঁচে ভালবাসার মাঝে।
নববর্ষের আনন্দ মাঝে আসে যতই দুখ,
তবুও বাঙালি বেঁচে থাকে আশায় ভরে বুক!
(ঘরের পালা/ পলা = ঘরের খুঁটি)