(১)
যখন বার্মিংহামের মাটিতে পা রাখলাম
তখন দুপুর এক, আলো ঝলমলে;
অভ্যর্থনাকারী আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা
সংখ্যায় সাতজন প্রতীক্ষারত,
সবাই বলাবলি করছিলেন -
‘আজকের দিনটা খুবই উজ্জ্বল’
বুঝিবা আমাকে স্বাগত জানাবার তরেই
এর এত হাস্যোজ্জ্বল আয়োজন।
গাড়িতে বসে দেখছি নিসর্গের
নগ্ন-প্রায় চেহারায় অবাক তাকিয়ে থাকা,
পুরনো ধাঁচের চোখা লাল-মেরুন
দালানগুলোও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে,
আঁকাবাঁকা আর বন্ধুর পথ পেরিয়ে
আমার যাত্রা অচেনা শহরের গন্তব্যে।
গাড়ি যখন থামলো -
নামতেই টের পেলাম ভীষণ শীত
লম্বা লন পেরিয়ে ছোট্ট একটা বাড়ি,
দালানের মিছিল কিংবা শহরের কোলাহল
যেন থেমে গেছে এখানে এসে;
সামনেই একটা পার্ক
পাখির গুঞ্জন আছে, অথচ প্রকৃতি নিথর!

ছোট্ট ছিমছাম ঘরে ঢুকতেই
মনে পড়ে যায় -
অন্ধকবি হেলেন কেলারের কথা,
লতা জড়ানো পাখির কিঁচির-মিঁচিরের
ছোট্ট এক ঘরে ছিল শিশু হেলেনের স্বর্গ
কোনো এক অজানা ঈশারায় একদিন
তার সব হয়ে যায় আঁধার;
ভাবতেই মোচড় দিয়ে ওঠে কলজেটা!

(২)
এখানে মশা, মাছির উপদ্রব নেই
নেই বায়ূদূষণ কার্বন মনোঅক্সাইড
নেই যন্ত্রদানবের বিকট চিৎকার
তথাপিও আমার ‘মন’ টানে
কেবলই ‘স্বদেশ আর স্বজন’এর পানে!

(৩)
ঘরে বাইরে সর্বত্রই কেবল হিম-শীতল
উষ্ণতার জন্য কত যে আয়োজন!
জাত-ফাতের বালাই নেই
সবার ভাষা এক - ইংরেজী;
আমি শুধু স্বগতোক্তি করি আপন ভাষায়!

[ভিলা প্লেইস, বার্মিংহাম: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০০১; সকাল ৭টা]