'দিন' মানেই তিলিসমাৎ প্রকৃতি
আর অচেনা মানুষগুলোর দিকে
আমার অবাক তাকিয়ে থাকা
আর যন্ত্রণার প্রহর গোণা;
‘রাত’ মানেই ‘নিদ্রাহীন’
কিংবা ‘স্বপ্নের বেসাতি’!
আমি ফিরে যাই সদ্য অতীতে
সাক্ষাৎ হয় সহকর্মীদের সাথে।
আমায় দেখে তাঁরা কিছুটা বিস্মিত হয়
কাছে ডেকে বলে, ‘‘আপনি আমাদের ছেড়ে
চলে গেলেন এমন ভাবে একেবারে?’’
কিছুটা ‘চোরাই স্বভাবে’ নিজেকে গুটিয়ে বলি,
‘‘না...! কই, যাইনি তো আমি,
ফিরে এসেছি তো আপনাদের মাঝে!’’
স্মৃতির দুয়ার খুলে যায়ঃ
দেখি সহকর্মীদের মাঝে আমি;
আড্ডায়, কাজে আর গল্পের আসরে।
ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দেখা হতেই
কেউবা দৌড়ে এসে অনুযোগ করছে,
‘‘স্যার! আপনি পারলেন আমাদের ছেড়ে যেতে!’’
বললাম, ‘‘না...! কোথাও যাইনি তো,
এইতো ফিরে এসেছি তোমাদের মাঝে!’’
‘‘সত্যি বলছেন তো?’’
‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, সত্যি! একেবারে সত্যি!’’
কেউবা কটাক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দূর থেকে;
আমি স্পষ্ট দেখছি, তাদের চোঁখ বলছে,
‘‘আমরা কি-না এতটা শ্রদ্ধা-ভালবাসা দিলাম
আর তুমি চলে গেলে পায়ে ঠেলে?
ছি...! ধীক্কার দিই তোমায়,
এ পোড়ামুখ আর দেখতে চাই না আমরা!’’
আমি ‘চোরাই স্বভাবে’ শুধু নিজেকে গুটিয়ে রাখি।
আমি ফিরে যাই আমার স্বজনদের মাঝে,
আমাকে দেখেই আনন্দের হুলস্থুল;
‘পিচ্চি’রা জড়িয়ে ধরে বলছে,
‘‘আপনি আমাদের ছেড়ে থাকলেন কী-করে?
কথা দিন, আর ফিরে যাবেন না’’!
‘‘ঠিক আছে, আমি আর যাবো না’’ -
শুনতেই স্বজনদের আনন্দে ভাটা পড়লো;
মুখে কারো ‘রা’ নেই, তবে চোঁখ বলছে,
‘‘ও...! তাহলে তুমি বুঝি আর যাচ্ছ না!
‘প্রাচুর্যবাস’ বুঝি তোমার সয় না!’’
কিন্তু, আমি পারছি না প্রকাশ্যে বলতে,
‘অর্থের বৈভব নয়, চিত্তের বৈভব’ই চাই আমার;
চাই দেশ, মাটি, স্বজন, সহকর্মী আর অনুবর্তীদের
আঁকড়ে ধরে বাকীটা জীবন কাটিয়ে দিতে!’
অথচ, ‘অপত্য স্নেহশূন্য’ হওয়া থেকেই
আমি কেবল হারিয়ে যাচ্ছি ‘অচেনা গলি’তে!
[ভিলা প্লেইস, বার্মিংহাম, ইংল্যাণ্ড: ৮ই জুন ২০০১; সকাল ৮টা]