হে ধূমকেতু!
তোমার ধূমকেতু-রূপ স্বচক্ষে দেখিনি বলে
আফসোসের আমার অন্ত নেই
অথচ, তোমার সশরীরী উপস্থিতি
অগ্নীবীণায়, বিষের বাঁশি’তে;
তোমার কবিতা, গান, গল্প
আর মসি’র প্রতিটি আঁচড়ে
কোথায় না আমার নিত্য সাক্ষাৎ
তোমার সাথে?
হে বিপ্লবী, অগ্নিপুরুষ!
যুদ্ধের দামামায়
বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে
অত্যাচারীর উৎপীড়নে
প্রতিবাদের বজ্রহুংকারে
রাজনীতির সুস্থ চিন্তায়
তোমার সাক্ষাৎ সুস্পষ্ট!
হে বুলবুল!
নার্গিস বনে, শাওন রাতে
গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনীতে
রিক্তের বেদন’এ
ব্যাথার দানে
রাজবন্দীর চিঠিতে;
কোথায় না তুমি
হুল ফুটিয়ে, ফুল ফোটায়ে যাও?
অথচ, ক্ষেপে ওঠো নারীর অধিকারে
ধর্মজীবিদের ক্লৈবত্বে।
হে কাঙাল পুরুষ!
এত যে তোমার কাঙালিপনা
প্রেয়সীর, প্রেমের, সন্তানের
তৃপ্ত কি নও তুমি
এতটা জয় করেও অবলীলায়!
হে স্রষ্টাপ্রেমিক!
স্রষ্টা-প্রেমের অমৃতধারায়
সৃষ্টিকে মজাও তুমি প্রেমসুধায়;
কী-করে নোয়াও সৃষ্টিরে স্রষ্টার পদতলে
কী-করে বসাও তারে প্রাণের ’পরে!
হে চির শিশু, চির কিশোর, চির যুবক!
তোমার প্রভাতী কাব্য
ঘুমপাড়ানীর গান
সংকল্প
যৌবনের গান
শৈশব, কৈশোর আর তারুণ্যের
রক্তে তীব্র প্রাণ-উদ্দীপক।
হে ক্ষুধার্ত!
দারিদ্র্যের সংগ্রামে
তোমার উন্মীলিত উলঙ্গ দৃষ্টি
মেয়্ ভূখা হুঁ’র খুরধার বাণী
লোভাতুর চিতে জ্বালিয়ে দেয় চির-দহন!
অথচ তোমাকে করে ঐশ্বর্যবান।
হে কাব্যতীর্থ!
ভাষার নতুন মাত্রিকতায় সমৃদ্ধ করে
বাংলাকে দিয়েছো-
এ কোন সিংহাসন?
যেখানে আজোও পৌঁছেনি
বিশ্বসাহিত্যের কোন আসন!
হে সাম্যবাদী!
সাম্যের এ কোন গানে উছলে দিয়ে
খুলে দিলে বঙ্গদেশের ভালবাসার খিল
গালাগালিকে করে গলাগলি
ঘটালে সকল সম্প্রদায়ের অবাধ মিল!
হে বিদায়ী!
তুমি চিরতরে দূরে চলে গেলে
কোলাহল মুক্ত-
নিশ্চল-নিশ্চুপ;
অথচ, দিলে না তোমারে ভুলিতে
তাইতো নিত্য সাক্ষাৎ আমার
তোমার সাথে।
[৯ জুন ২০০৮; সকাল ৬টা]