বলখের বাদশাহ ছিলেন ইব্রাহিম আদহাম
শান-শওকতে ছিল তাঁর বেশ নাম-ধাম।
একদা দাসী তার বিছানা গুছাতে গিয়ে
শখের বশে বিছানায় দেয় গা এলিয়ে।
নরম জাজিম আর মখমলের বিছানায়
শোয়ার সাথেই ঘুম তার লেগে যায়।
সহসা জেগে উঠল বেত্রাঘাতের ব্যথায়
কঠিন শাস্তির চোটে ভেঙ্গে পড়ে কান্নায়।
বেত্রাঘাতের মাত্রা ক্রমেই হলে বর্ধিত
কান্না তার হল অট্টহাসিতে বিবর্তিত।
পিটায়ে ক্লান্ত বাদশাহ দিয়ে তাতে ক্ষ্যান্ত
জিজ্ঞাসিলেন কী তার কান্না-হাসির অর্থ।

শুধালে চাকরানী তাঁর এমন কী বৃত্তান্ত
শুনে হলেন বাদশাহ যে ভীষণ স্তম্ভিত!

শুয়েছি আরামের বিছানায় ক্ষণিকের তর
শাস্তি আসল নেমে কঠিন থেকে কঠিনতর;
তাই কাদঁছিলাম আমি বেত্রাঘাতের ব্যথায়
কর্মক্লান্ত শরীরে এমন চাবুক সওয়া না যায়।
যে পালঙ্কে কাটালেন ইব্রাহিম যুগের পর যুগ
তাঁর শাস্তির পরিমাণ হবে না-জানি কতটুক!
ক্ষণিকের তরে ঘুমানোর শাস্তি হয় যদি এমন
তাঁর মালিক রেখেছেন তাঁর তরে শাস্তি কেমন?
তাঁর শাস্তির তুলনায় আমার শাস্তি কিছুই নয়
তাঁর শাস্তি হবে বহুগুণে আমার চেয়ে নিশ্চয়!
এই ভেবে ভেবে আনন্দে হলাম মাতোয়ার
তাই ব্যথার কান্না নিল হাসিতে রূপ আমার!

এমন বিজ্ঞ কথা শুনে ইব্রাহিম হন বাকশূন্য
করণীয় না বুঝে কিছু হলেন দিগ্বিদিক শূন্য;
তাই বাদশাহী তখতে তাঁর দিয়ে লাথি
বেরিয়ে পড়েন স্রষ্টার সন্ধানে হন বনবাসী।

(১৪/০৮/২০২৪)