আজকাল কেউ কেউ বলেন--ও বাবা,ওসব কবিতা-টবিতা বোঝা
আমার কম্ম নয়!কেন,কবিতা কি কঠিন অঙ্ক,না কি কোন সাঙ্কেতিক
মন্ত্র,না তর্কবিদ্যার ফেলাসি ব্যাখ্যা!কবিতা এসব কিছুই নয়।কবিতা
তখনই কবিতা হয়ে ওঠে,যখন এর মধ্যে একটা বোধ কাজ করে।
কবিতার কোন ফর্মূলা নেই। অথচ এর মধ্যে কবি চেতনার একটা স্পষ্ট ছাপ আছে।কোন কিছু একটা ভাবনা,কিছু দেখে চিন্তা--এ ধরণের মানসিকতাই তো কবিতায় থাকে।
কবিতায় একটা ভাললাগা থাকে।যেমন,লাজুক ছায়া বনের
তলে আলোরে ভালবাসে/পাতা সেকথা ফুলকে কয়, ফুল তা শুনে
হাসে/।কেউ বলতে পারেন,পাতা-ফুল-ছায়া এরা কি কথা বলে?
যত্তসব!কিন্তু এর ভেতরের কথা যেটা বলতে চাওয়া হয়েছে,সেটাই
আসল,পাতা-ফুল-ছায়া কবির উদ্দিষ্ট নয়।আমি যদি সুন্দর করে
একটা অন্য মানে করি--তাও হবে।কিন্তু একবারও কবিতাকে না
ছুঁয়ে তার থেকে ছিটকে যাওয়া,কবিতাকে অচ্ছুৎমার্গে ফেলে দেওয়া
--এটা ঠিক নয়।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন অর্থ থেকেও আমাদের তাকে
নিয়ে যেতে হবে অর্থমুক্তির দিকে।যেখানে কেবল শব্দের বন্ধনেই
বাঁধা থাকবেনা,যা পড়ে পাঠকের মন আনন্দে ভরে উঠবে।কবিতার
উদ্দেশ্য তো তাই।এই আনন্দের বিধেয়টুকু পাঠকের থাকলেই তো
ভাল।যে কবিতা সোজা ঢুকে যাবে আমার মস্তিষ্কে আর আমার
সামনে খুলে দেবে একটা নতুন জগৎ!
কবিতা যখন আমরা পড়ি তখন এর শব্দগুলি আমাদের
মনে একটা আলোড়ন তোলে।আমাদের আত্মাকে আকৃষ্ট করে।
একটা কবিতার শরীরী দিক,আর একটা উপলব্ধি---দুইয়ে মিলে
কবিতা।তা ঠিক কতটা দৈর্ঘ্যের হবে,ছোট না বড়--এসব ঠিক
করবেন যিনি এর রচয়িতা। কারণ হৃদয় চিরে এর জন্ম দিয়েছেন তিনিই ।ঠিক কতটা লিখলে তা গুটিপোকা থেকে প্রজাপতি হয়ে
আকাশে ডানা মেলবে তা কবিই জানবেন।