************

-          কত দুঃখ কত ক্লান্তি বয়ে বয়ে দিনের-রাতের সময়টুকু পার করে যাওয়া তা' কি কেউ জানে, এমন গভীর বোধ কি আর সকলের হয় ! হয় না । হবার কথাও নয় । সবার মন তো আর একই রকম তারের উচ্চতায় বাঁধা থাকে না - থাকতে পারেও না ।

          এইরকম আবোলতাবোল ভাবতে ভাবতেই আনমনে ব্যস্ত শহরের ব্যস্ততম রাস্তা অবলীলায় পার হয়ে চলে রবি শর্মা । জীবন বড্ড জটিল এক সমীকরণ । সবার বেলায় একই রকম সূত্র খাটে না একেবারেই । তবু মানুষ এই জীবনের কাছেই সুখ চায়, আনন্দ চায় - তৃপ্তি মাগে, ভালবাসাও কামনা করে !

          ভালবাসা কি ! সে এক একজনের কাছে এক এক রকম ।
কত রকমের যে ভালবাসাও হয় । ভাবতেই বুকের ভেতর একটা অজানিত শিরশিরানি টের পায় রবি শর্মা ।

          এই যে সারাদিনমান কলুর বলদের মত খেটে বাড়ী ফেরা, ছোট্ট মেয়েটি এসে হাত ছুঁয়ে দিলেই মনে হয় - ধুয়ে মুছে গেলো সারাটি দিনের ক্লান্তি । সেকী মায়া - সেকি কোন ভালবাসা ! কে বলতে পারে !
  
         কে দেখেছে এই জগতে ভালবাসার শুদ্ধ স্বরূপ ! গভীর অনুভবে কে পেয়েছে এই শুদ্ধতার সিক্ত পরশ ! মানুষের বোধ সবইতো ভাসা ভাসা- ভালবাসার বোধও তেমনই ভাসা ভাসা অনেকেরই কাছে । কত মানূষ সারা জীবন পার করেও ভালবাসার হদিসটুকুও পায় নি ! ওরা কী দুর্ভাগা ! কে বলতে পারে !

         ভাবতে ভাবতে রবি শর্মা বাড়ীর দরজায় এসে দাঁড়ায় । দরজার বাইরে দেখে একটি নোট - রবি শর্মার স্ত্রী নেহার হাতের লেখা  - "আমি মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ী চলে গেলাম - তুমি তোমার চাকরি আর অফিস নিয়েই থাকো " ।

         গভীর ক্লান্তিতে শরীর যেন টুকরো টুকরো হয়ে গেল - সিঁড়ির রেলিং ধরে সে সিঁড়িতেই বসে পড়ে- স্যুটটাই সমেত -।  হায়রে সংসার - একটি দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে বেরিয়ে আসে -- নিথর করে দেয় যেন প্রাণ !! মেয়ের জন্যে কেনা ক্যাডবেরীর প্যাকেটটা হাত থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে নীচে পড়ে যায় --।।


                                 ---০---