(পুর্ব মেদিনীপুর জেলার ‘কালো মেয়ে’ শিক্ষিকা ব্রততী দাসের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় বেদনার্ত হয়ে)
                          ১
আফ্রিকা পর্যটনে আঁধারের ইতিহাস কোথাও পাবে না তুমি।
ওখানে মানুষ আছে; সূর্য উদিত হয় ভোরে।
উদ্বাহু বিজয়ে হাসে নেলসন ম্যান্ডেলা।

আমার ভ্রমণপথে যেন মস্ত হিমালয় জাগে।
ব্রততী পাহাড়-সম প্রশ্ন রাখে যাত্রা পূর্বভাগে।  
                         ২
ব্রততী গাঁয়ের মেয়ে, ত্বকে তার আজন্ম আঁধার।
'রাতেরও আয়ুষ্কাল দিনের সমান' এই ভ্রমে
সে-ও বিদ্যালয়ে যায়, বুকে জাগে সময়-সংকেত।
ঋতুচক্র সবদেশে দেশজ নিয়ম মেনে আসে।

ব্রততী গাঁয়ের মেয়ে, মেধাবী সে; স্বপ্নবিলাসী।
কিশোরী বয়সে তার দুচোখে জেগেছে অভিলাষ।
দুচোখে স্বপ্ন তার – কলকাতার ছেলে হবে বর।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছে; অকাতরে
শিশুমনে আলোকণা বুনে রাখে কৃষ্ণাঙ্গী মেয়েটি।
                       ৩
এই পোড়া দেশে হায়, সকলের সময় প্রবাহ
সমান বেগেই ধায়। কালো মেয়েটিরও তাই জোটে
শরীরে সময়-ছাপ। সংগত কারণে রেগে জেগে ওঠে পিতা।
(মূলতঃ সে প্রতিনিধি, মহাভারতের অন্ধ পিতা।)
                       ৪
জেগে ওঠে রোষানলে, মেয়েকে সে বলেছে উপায়-
ছিদামের বড় ছেলে
জেল থেকে ছাড়া পেলে
ওর সাথে বিয়ে দেবে; এভাবে মিটাবে কন্যাদায়।
এমন বিষোদ্গার
করে সে দ্বিতীয়বার
বলেছেঃ কুলক্ষণা, কেরোসিন পড়ে না কি চোখে?
দ্বিতীয় পথটি ধরে
ব্রততী গিয়েছে সরে
আঁধারের ইতিহাস লিখে রেখে অনন্ত আলোকে।