তুইও জানতিস, আমি শুধু তোকে বড় ভালোবাসতাম,
তোর দেখা পেলে শিউলির মতো অকারণে হাসতাম।
তুইও জানতিস, তোকে নিয়ে কত গড়েছি সঞ্জবন,
উড়িয়ে দিয়েছি অসীমের দিকে পারাবত অগণন।
ভাবনায় ছিল অভাবনীয়তা, চলনে ছিল না যতি,
কথোপকথনে রবীন্দ্রনাথ এসে যেত সম্প্রতি;
এসে যেত কত পৌরাণিকতা, মহীয়ান-মহীয়সী,
দেশ-কাল বেয়ে এগোত সময়, কখনও আকাশে শশী
দেখে অপরূপ নিমগ্নতায় নির্বাক আয়োজনে
পেরিয়ে যেতাম সময় সারণি বিমুগ্ধতার ধনে।
তুইও জানতিস, সহজ ছিল না তোর সাথে চলাচল,
অজানা ছিল না কোমরের বেড়ি, গলদেশে শৃঙ্খল।
তবু তোর সাথে কাটিয়েছি কাল, পুড়িয়েছি তোর মুখ;
সূর্যোদয়ের পাহাড় দেখেছি বিস্মিত-উত্সুক।
অরণ্যভূমি ভ্রমণের কালে সাপে কেটেছিল তোরে,
জ্যোত্স্না-রাতের সেই স্মৃতি নিয়ে সমতলে ফেরা ভোরে।
বহু বাঁধনের পাঠশালা ভেঙে অভিনব শিক্ষায়
ঋদ্ধ হয়েছি চিরকাঙ্খিত শাশ্বত ভিক্ষায় ।
অজানা ছিল না আমাদের পথ ক্রমে ক্রমে যাবে সরে,
তবুও চলেছি তোর সাথে কত অজানায়, হাত ধরে।
আজ সব আলো গোধূলির রঙে, বেদনার রঙে মিশে
একাকার; আমি পথ ভুলে গেছি, সময়ের আশীবিষে
কেটেছে বিষম, পড়ে আছি একা সীমাহীন নিরালোকে;
এই অসময় অগম্যতায় বড় প্রয়োজন তোকে।
তোর পথে যদি আলো ফুটে ওঠে, যদি জাগে আহ্বান,
তবে জেনে রাখ, ও-পথেই আছে পথিকের সম্মান
আমিও পথিক, সময়ের দেশে আলো এলে পূনরায়
হয়তো বা দেখা হয়ে যেতে পারে গোলাকার বসুধায়।