হে বিধাতা কারা যেন টেনে নিয়ে গেল– তোমার সৃষ্টিকে!
অজানা মৃত্যুর দিকে।
অস্ফূট যন্ত্রনার মতো
দীর্ঘ ভাষাহীন প্রতিবাদ আমার,
অসীম প্রেমময় রক্তের নিগর্লিত স্রোতে,
সেইখানে।
কেননা সেই আমার একমাত্র সন্তান!
স্প্লিন্টারের বহ্নিদগ্ধ আঘাতে আঘাতে, আজ তার চ্ছিন্ন ভিন্ন দেহ!
মরণের সংঘারামে জেগে নাই কেহ আর দেখিবার তরে।
অসীম অন্ধকারের ঘৃণা আর জিঘাংসায়,
এক পৃথিবী সৌহার্দ্যহীন রক্তের উল্লাসে–
আজ তার প্রণম্য প্রতিবাদ!
কোথাও নাই কোনও খাদ–
কোথাও নিরুজ্জ্বল শায়িত প্রাচীন মনীষার তিরে
নাই এ জীবনের ব্যাপৃত অবসাদ,
যদিও ক্লান্তিহীন ঘুমের ভিতর,
এ এক নারকীয় সময়!
সেইসব অনুপম
নাক্ষত্রিক মেধায়, আজ তার প্রত্যহ অলিন্দে–
অলঙ্ঘ্য প্রতিবিম্বের মাঝে
অনুপম অস্তিত্বের প্রগাঢ় মুখোছবি ভাসে।
নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের সর্মথনে,
শরতের আদিম আকাশে,
পারস্পরিক অনুকম্পায় উপস্থিত স্বপ্নের দেবদূত অগণন–
তোলে আদি দিগন্তে সমুদীপ্ত উচ্চারণ!
চেতনার নান্দনিক ক্ষতে।
যে ফুল ঝরে গেল অব্যক্ত যন্ত্রনায়–
রূপ মুক্ত সমাজের বুকে,
কুৎসিত বীভৎস্য লালসায়–
প্রতিভাত আলোর আকাশে স্বপ্নের নিস্পন্দ তারাগন–
মায়ার নিরুত্তর সভ্যতার বুকে, প্রারম্ভিক আত্মার সংলাপ খোঁজে–
তার স্বগত ঐকান্তিক প্রয়াসের ভেতর দিয়ে,
হে অসম্ভব অসমর্থ পিতা–
আজি সেই শপথ নাও–
শপথ করো,
ওই চাপ চাপ বেদনার্দ্র রক্তের উৎসবে–
আমার নিষ্পাপ সন্তানেরে হত্যা করল যারা,
ছিঁড়ে নিল বৃন্তসম  একটি স্নেহময় সুন্দর ফুল,
কোথাও যেন নাহি পড়ে রয় সমরিক্ত স্ম্রিয়মান সেইসব কীটেদের লাশ,
বাচাঁর সুতীব্র আর্তনাদে।
হায় আল্লাহ–
এই নৃশংস নারকীয় অত্যাচারের পরও,
এইসব নিরুপম পাশবিক উৎসবে চিরন্তন ইতি টেনে দিয়ে,
তারেও তুমি ক্ষমা করো!
সস্নেহ আলিঙ্গনে বলো তারে,
এ ঘুমহীন নিরুদ্দিষ্ট সভ্যতা মানবের, কোনও ঋদ্ধপ্রাণ অব্যক্ত শ্বাপদের নয়!
যেখানে তোমার সৃজন মৃত্তিকার তলদেশে ঘুমোয় আমার সন্তান! চিরজন্মের মতো মরণের হিমায়িত হিম হিম সৌভাগ্য নিয়ে–
পরম স্নেহাস্পদ তোমার অমলিন  স্নেহস্পর্শে আচ্ছন্ন সে এখন!
চিত্তশুদ্ধ পৃথিবীর অজর মাতৃক্রোড়ে, আজি নিষ্প্রাণ নিষকলঙ্ক পরাধীন ঢেউয়ের আঙিনায়– আজি ঘুমোক সে।
তুমি ললাটের মধ্যরেখায় স্নেহ চুম্বন এঁকে দিয়ে তারে,
জগোন্ময়ীর মাতৃসম আর্শীবাদে–
আর দেখো,
কোনও দিন যেন এমন বিলাপ গীতি ধ্বনিত না হয়,
কোনও এক নিঃসঙ্গ
ক্লান্ত পিতার কিম্বা এই জগত সম্ভুত অখিল মানবের অনন্ত নির্লজ্জতায়!
হে করুনাময় কোনও এক হৃদয় বিদারক
ক্লান্ত কন্ঠে।।