দস্যি মেয়ের আলগোছা চুল,খোপাতে ফুল,
ছিচকাঁদুনি স্বভাব।
দাদু দিল চিমটি গালে,চুমু কপালে,
তবুও তাঁর সাতআদরের অভাব।
অভাব আমার,অভাব তোমার,
অভাব নিয়েই থাকি।
অভাব ঘরেই সুখ এসেছে,
শান্তি আসা বাকি।
আশার নেশায় কাটছে শরীর,
মিছে অভাবে আমি মগ্ন।
সোনার খাটেও ঘুম হয়নি,
অভাবই আমার জন্মলগ্ন।
অভাব রাজ্যে ফুল ফুটবে,
কাঠামো নিয়ে ব্যাস্ত রাজন।
চারজন মিলেই মন্ত্রীসভা,
অতি ভক্তে নষ্ট গাজন।
অন্নের অভাবে বেকার সমাজ
ছেড়েছে ভিটেবাড়ি।
লজ্জার অভাবে শাড়ি ছেড়ে
আধুনিক হল নারি।
বাপের ঘরে,শত আদরে,
কন্যার কপাল ছিল দামি।
সোনার হারের ঘোর লালসায়
তাঁর বুক ভাঙলো স্বামী।
নৌকাবিলাসের ঘোর স্বপ্নে
মাথা করেছ দান।
স্বর্গবাসেও ফুল পাবেনা,
যতই রাখো মান।
আমার ঘরে চাঁদের ছটা,
শান্ত বিহঙ্গ খোটায় বসে।
সুযোগ পেলেই আদর কিনব,
যদি পায় দু-দশে।
বাঁচার গল্প আঁকড়ে নিয়ে,
এই তো আছি বেশ।
অভাবের বন্যা মিটবে জানি,
আকাংখা হলে শেষ।
জীবন প্রানের শুষ্ক অভাব,
মেটায় পাড়ার হাটে।
জলের অভাব কোমল মাটির
পাঁজরে দাগ কাটে।
বৃক্ষ কেমন নম্র জাতি,
নিষ্ঠুরও পেল ছায়া।
তবু প্রেমের অভাবে ধ্বংস করেছি,
উদারও করেনি মায়া।
পথের শিশুর দুধের চাহিদায়
বিধাতা পড়ল ফাঁদে।
তাঁর ক্ষুদার জ্বালার তপ্ত দুপুর
ব্যাস্ততার ভীড়ে কাঁদে।
তোমার অভাবে ভয় করেছে,
ঘনিয়ে এল রাত।
মন ভোলাতে যত্ন চায়না,
খালি মাথায় রাখো হাত।
বিবেকের অভাব হার মেনেছে,
বোঝা তুলেছে কুলি।
বিচারের অভাবে রক্তাক্ত কাশ্মীর,
শহীদের মস্তকে গুলি।
যে অভাব হৃদয় চিরে
স্বভাব করেছে মাটি।
তার ঝুলিতেই মস্ত জগৎ,
মিছেয় পরিপাটি।
শহরের অভাব,শান্ত সকালে
মিষ্টি পাখির ডাক।
যৌবনের অভাবে চুল পড়েছে,
মাথায় বেজায় টাঁক।
পূজোর অভাব হার মানাতে
কাশ মেললো শিষ।
পাড়ায় পাড়ায় অসুর বসেছে,
রক্তে ঢেলেছে বিষ।
আমার অভাব ঘরে,রাতদুপুরে,
বিষম জ্বালা দেখা।
অভাব মনে,অভাব ধনে,
অভাব নিয়েই লেখা।
অভাবের বড় ছ্যাবলাপনা,
বিঁধে প্রেমের বুকেও কাঁটা।
সোনার দেশে দীন এনেছে,
এমন বুকের পাটা।
অবলা মায়ের কোল ভরেছে,
আর কি সুখের অভাব।
পত্নীসুখে ছেলের মন ভরলো,
বুড়ি পেল নাড়ির যন্ত্রনার জবাব।
পিশাচ ছেলের যৌবন কাটে
পত্নীসেবার ঠাটে।
ভাগের মা গঙ্গা চলে
অভাব নিয়ে খাঁটে।