ঘুম থেকে উঠে দেখি
বরফেতে সাদা,
যেতে যেতে বৃষ্টি পড়ে
হয়ে গেলো কাদা।
হঠাৎ দেখি মাথার ওপর
সূর্য্যি মামার আলো,
কোথা থেকে মেঘ এসে
করে দিলো কালো।
বাতাস এসে মেঘ গুলোকে
দিলো তাড়িয়ে-
সূর্যি মামার আলো আবার
পড়লো ছড়িয়ে।
এই পদ্যের জন্ম লগ্নে বয়স আমার আট,-
কাগজে প্রথম কলমের আঁচড়ে ছন্দ বেরোয়,
মনে কত আশা, কত সাধ—
অনেকেই বলে, এ নয় কবিতা,
কি সব লিখেছো ! রোদ-বৃষ্টি-কাদা !
এত তড়িঘড়ি আবহাওয়া বদল ?
অসম্ভব এ ! এ যে অদ্ভূত খেয়াল !
লিখেছো কি ? যত অনাসৃষ্টি,
কখনো বরফ, কখনো বৃষ্টি !
কখনো বা প্রখর সূর্যের তেজে
মেঘের আনাগোনা আকাশের মাঝে ?
আবহাওয়া দপ্তরে লেগে যাবে ত্রাস!
যায়নি শোনা কখনো, ঘেটে ইতিহাস !
অগত্যা,-হারায় সে কবিতা গভীর আঁধারে
পায়না স্বীকৃতি ডুবে যায় ধীরে।
তবু মনে রয়ে যায় একটি ভাবনা,
কোথাও কি এমন দেশ পাবো না ?
যেথা একসাথে খেলা করে রোদ ও বৃষ্টি
বন্ধুত্ব,-মেঘ,বরফের,-নয় অনাসৃষ্টি !
গুগোলে করিনু বিশ্ব ভ্রমন,
মহা আনন্দে ভরে ওঠে মন।
পেয়েছি পেয়েছি ! গুগোলে রয়েছে !
এমন দেশ ও খুঁজে পাওয়া গেছে !
যেখানে এক সাথে খেলে বৃষ্টি বরফ,
আচমকা বদল, নয় অসম্ভব !
এবার আসুক বন্যা, আসুক ঘূর্ণি,
কাঠফাটা রোদ, চাঁদের রোশনী-
দাবদাহে সব জ্বলে পুড়ে যাক্,
শৈত্যপ্রবাহে ঢেকে ডুবে যাক্,
মেঘমল্লার রাগে বাজুক সঙ্গীত-
কুলুকুলু ধ্বনিতে মঙ্গল গীত।
উদ্ধার হবে হারানো কবিতা-
কত বছরের কত স্মৃতি কথা।
উচ্ছ্বাসে আজ মাতিয়ে ভুবন,
যা রয়েছিল হৃদয়ে গোপন,
কবিতা বেরোবে জনসমক্ষে,
আনন্দাশ্রু বয়ে,- যায় চোখে মুখে।
হয়তো সে কবিতা অতি নগন্য,
গুণীদের কাছে হবে না মান্য।
তবু স্বীকৃতি চায়, শিশুর কবিতা,
ভুলে যেতে চায় হৃদয়ের ব্যথা।
আট বছরের শিশু সারল্যে,
ছিল না দ্বন্দ্ব, ছিল না বৈরিতা,
প্রকৃতির এই রোদ বৃষ্টির খেলায়
হয়তো সে খুঁজেছিলো শুধুই একতা !!
———————————————
(কবিতাটি যখন লিখা হয়েছিলো, তখন আমার বয়স সাত /আট। নাম ছিলো না তার। লিখার দু বছর পরে নাম দিয়েছিলাম “হাওয়াবদল”। আমার জীবনের প্রথম ছন্দ। )