অন্যরকম ভাবতে শেখা
------ সুপ্রিয় কুমার চক্রবর্তী

মাঝে মাঝে আমি অন্যরকম হয়ে যাই
ভিতরের সুপ্রিয়টাকে ছুটি দিয়ে বলি
যাও বাবা, ক'দিনের জন্য তোমাকে মুক্তি দিলাম ।

আমার মাঝে মাঝে হাতি হতে ইচ্ছে করে
আমিষের উন্মাদনায় নয়,
কামুক লোভাতুর হিংস্রতার চাদর ঝেড়ে ফেলে
বিশাল এক হাতি হতে ইচ্ছে করে ।
নিরামিষের সুবাসে কাব্যিক আহারে
ধীর-স্থির শান্ত এক চতুস্পদ
আমি যে কতটা বড় ও ধ্বংসযজ্ঞের সৈনিক
সেটা ভুলে যেতে ইচ্ছে করে ।

মাঝে মাঝে আমার সিংহ হতে ইচ্ছে করে
কিংবা নীল আকাশের একচ্ছত্র সেনাপতি ঈগল ।
এক লক্ষ্য , এক নিশানা , রাষ্ট্রের রাজটিকা
নিজেকে বনের কিংবা আকাশের রাজা
ভাবতে খুব ইচ্ছে করে ।

আমার না ফুল হতে ইচ্ছে করে
গন্ধরাজ কিংবা টিউলিপ
শ্বশান থেকে কবরস্থান
কিংবা বিয়ে , জন্মদিন
কোন মহাপুরুষের পদতলে
পূজায় , উৎসবে , ফেয়ারওয়েল পার্টিতে
কোনো তরুণীর চুলের বেণী  
কিংবা প্রথম প্রেমিকার হাতে শোভিত
এক তোড়া লাল গোলাপ ।

ইচ্ছে করে হয়ে যাই
গোল্ড ফিশ , ঘাস ফড়িং
নদীর ধারে কাশফুল;
মাঝির বৈঠা , শ্রমিকের ঘাম
সিঁথির সিঁদুর , ভোরের শিশির
দুপুরের জোড়া শালিক , ঘিয়ে ভাজা মুড়ি
বিন্নি ধান , চ্যাপা শুঁটকি
করলার শুকতা , রাতা মোরগের কষা মাংস ।

যদি একবার সুযোগ পাই
হয়ে যাবো হেমন্তের বিকেল
শরতের শিউলি
বর্ষার ভেজা নৌকা
বসন্তের কৃষ্ণচূড়া
নয়তোবা জীবনানন্দ দাশের
কবিতার বই
রবি ঠাকুরের গীতাজ্ঞলি
নজরুলের অগ্নিবীণা ।

সুপ্রিয়কে সত্যি সত্যি
একদিন ছুটি দিয়েই দেবো ।