আজো প্রতিবাদের ভাষা বলতে নজরুলের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’;
প্রার্থনা বলতে আজো বুঝি রবি ঠাকুরের, ‘বিপদে মোরে রক্ষা করো, এ নহে মোর প্রার্থনা’।
বর্ষার উদ্দামতা মানেই, ‘নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে’।
আজো পৃথিবীর বুকে ফিরে আসার নাম জীবনানন্দের, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে’;
নারীর সৌন্দর্য মানেই ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য।
আজো দেশ বন্দনা বলতে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের, ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা’;
আজো ক্ষুধার্তের হাহাকার বলতে সুকান্তের, ’ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’।
আজো স্বাধীনতা মানে শামসুর রাহমানের,’ স্বাধীনতা তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’;
আজো ছন্দের জাদুকর বলতে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের, ‘কোন্ দেশেতে তরুলতা, সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন্ দেশেতে চলতে গেলেই, দলতে হয় রে দুর্বা কোমল’?
আজো বসন্ত মানেই সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের, ‘ ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ বসন্ত’;
আজো হাসির ফোয়ারা মানেই সুকুমার রায়ের, ‘কুমড়ো পটাশ, ভয় পেয়ো না, রামগরুড়ের ছানা, সৎপাত্র, গোঁফচুরি’।
আক্ষেপের ধ্রুপদী সুর মানেই সুনীলের, ‘কেউ কথা রাখেনি’;
আজো ভালোবাসা মানেই নির্মলেন্দু গুণের, আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে’।
পাগলীর প্রতি প্রেম মানেই জয় গোস্বামীর, ‘ পাগলী, তোমার সঙ্গে ভয়াবহ জীবন কাটাব
পাগলী, তোমার সঙ্গে ধুলোবালি কাটাব জীবন’।
যুদ্ধের নৃশংসতা মানেই রুদ্র মুহম্মদের, ‘আজো বাতাসে লাশের গন্ধ পাই’;
আজো ভালো থাকার নাম, ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’।
রচনাকাল-৩রা ডিসেম্বর ২০২০