তুমি যেখানেই যাও
                 আমি সঙ্গে আছি
মন্দিরের পাশে তুমি শোনোনি নিঃশ্বাস ?
লঘু মরালীর মতো হাওয়া উড়ে যায়
                                   জ্যোৎস্না রাতে
নক্ষত্রেরা স্থান বদলায়
ভ্রমণকারিণী হয়ে তুমি গেলে কার্শিয়াং
                    অন্য এক পদশব্দ
                           পেছনে শোনোনি ?
তোমার গালের পাশে ফুঁ দিয়ে কে সরিয়েছে
                                চুর্ণ অলক?

তুমি সাহসিনী,
          তুমি সব জানলা খুলে রাখো
মধ্যরাত্রে দর্পণের সামনে তুমি--
          এক হাতে চিরুনি
রাত্রিবাস পরা এক স্থির চিত্র
যে-রকম বতিচেল্লি এঁকেছেন ;
ঝিল্লির আড়াল থেকে
                       আমি দেখি
তোমার সুঠাম তনু
ওষ্ঠের উদাস-লেখা
                     স্তনদ্বয়ে ক্ষীণ ওঠা নামা
ভিখারী বা চোর কিংবা প্রেত নয়
                         সারা রাত
আমি থাকি তোমার প্রহরী।
তোমাকে যখন দেখি, তার চেয়ে বেশি দেখি
                         যখন দেখি না
শুকনো ফুলের মালা যে-রকম বলে দেয়
                       সে এসেছে
চড়ুই পাখিরা জানে
      আমি কার প্রতিক্ষায় বসে আছি
এলাচের দানা জানে
        কার ঠোঁট গন্ধময় হবে--
তুমি ব্যস্ত, তুমি একা, তুমি অন্তরাল ভালোবাসো
সন্ন্যাসীর মতো হাহাকার করে উঠি
          দেখা দাও, দেখা দাও
পরমুহূর্তেই ফের চোখ মুছি,
             হেসে বলি,
তুমি যেখানেই যাও, আমি সঙ্গে আছি ।


(কাব্যগ্রন্থঃ জাগরণ হেমবর্ণ । প্রকাশকালঃ ২৫ বৈশাখ, ১৩৮১। উৎসর্গঃ বুদ্ধদেব বসু স্মরণে। প্রকাশকঃ সিগনেট বুকশপ।)