দূর জগতের
এক জরাগ্রস্ত পুরুষের মতো,
এক জটিল শহরের কল্পনার মতো,
এক কাটা ঘুড়ির বেদনার্ত হৃদয়ের মতো
আমাদের মনে এক
অদ্ভুত বিস্ময় চিরকাল ধরে ঘুমিয়ে ছিল।
সে এক ক্লান্ত বিস্ময় –
মহাকাল জুড়ে শান্ত পৃথিবীর মনে
যে জান্তব চেতনা উঁকি মারে,
তার চেয়েও নিঃসহায়।
পৃথিবীর প্রথম শিশু যেদিন আলোক দেখেছিল
সেদিন তার যে চেতনা,
তার চেয়েও প্রকান্ড বিস্ময়
আজ ক্ষান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে –
উন্মুক্ত মানবতার প্রান্তরে।
এখনো সেই অন্ধ বিস্ময়ে প্রতিদিন
নর্দমার মতো আবহমান জনতা মেশে
শান্ত মহাসাগরে।
আর আমাদের পূর্বপুরুষের নক্ষত্রের আলোয়
ম্লান হয়ে যায় জীবন
নিকষ কালো অন্ধকারে।
তবু এখনো দূর জগতের ওই
জরাগ্রস্ত পুরুষের মৃতপ্রায় কল্পনায়
শহরের জটিল হৃদয়ের মাঝে
রঙিন আকাশ থেকে কাটা ঘুড়ির মন ঝরে পড়তে থাকে –
আর সেই গভীর বিস্ময় আজ
আকাশ থেকে ধূসর রঙ চুরি করে
উন্মুক্ত মানবতার চোখে জন্ম নেয়।
তবে এরপর
সেই অনন্ত বিস্ময়
বেড়ে ওঠে আমাদের মিছিলের ক্লান্তির ভিতর –
বহুকাল ধরে মরচে পড়ে আসা
বিষণ্ণ অনুভূতির মতো।
তাই ওই অপরূপ বিস্ময়
আজ উন্মুক্ত মানবতার ভাগাড়ে
মৃতদেহের শান্ত স্নিগ্ধ জীবনযাপন নয় –
শকুন-শূন্যতার নিরন্তর অভিনয়।।