এখন লিখবো মনের কথা। আমার নিজের মনের মধ্যে ঝড় উঠলে যাদের লেখা পড়ে বা গান শুনে নিজেকে শান্ত করতে পারি তাদের কথা লিখবো।
লালন, কবির, রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদির মতন মনীষীরা বলে বলে মরে গেলো যে মানুষের সাথে মেশো, মানুষের কথা বলো। শুনছে কই? শুনলেই বা মানছে কই?
এই মানুষগুলি না ছিলেন দাম্ভিক, না ছিলেন অহংকারী। কি সরল, কি সাধারণ ভাষায় বলে দিলেন মুক্তির পথ। মানুষ ভজতে কইলেন লালন। কবীর ও তাই। কবিগুরু ও তাই।
শুনলো সবাই। শিখতে চাইলোনা।
ওনাদের রচনা গুলি দেখুন। কি মিল ভেবে অবাক হতে হবে।আবার যেই মগজ কে জোর না দিয়ে মনের চোখে দেখবেন, সেই বুঝে যাবেন যে এগুলো আসলে সব খাঁটি সত্য কথন। সত্যের রূপ সব সময় এক। প্রকাশের ভাষা আলাদা হতে পারে, অন্তর্নিহিত অর্থ চিরকাল সমান। সময় আর সত্যের রূপ যে এক ই। তাই তো এনাদের কথা মিলে যাই।
লালন এর গান “মানুষ ছাড়া ক্ষেপা রে তুই মূল হারাবি” গানটি কত সহজ এ মানুষ হবার উপায় বাতলে দেয়। কত সহজে “মাথা মুড়ে” জাতে ওঠার আসারতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। দেয় দেখিয়ে সহজ পথ। কেও কেনো চাইনা সেই পথে চলতে?!
কবির তার দুই পংক্তি রচনায় সেই একই তো কথা বলেন। হাতের মালার মুক্ত ছেড়ে মনের ভিতর যে মুক্ত আছে তার দিকে নজর ফেরাতে বলেন।
দুজনের লেখায় সেই এক ভাব। আবার দুজনেই আগে কর্ম করে তবে উপদেশ দেন। দুজনেই সারা জীবন রইলেন মানুষের সাথে, মানুষের মধ্যে।
রবীন্দ্রনাথ তো সারাজীবন মানুষের কথাই বলে গেলেন। কি সহজে লিখে গেলেন “মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।” এর পরেও কি র কিছু বোঝার বাকি থাকে? সব তো একই কথা শুধু শব্দ ভিন্ন। ভাব এক, কথা আলাদা।
ওনারা নিজে যা বলেন, করেন ও তাই। যদি প্রেমিক হতে হয় তবে কি এনাদের মতন হওয়া কি বাঞ্ছনীয় নয়। তিনজনেই তো মানুষকে ভালোবেসে অমর হয়ে গেলেন? তাদের কথাই তো মন্ত্র। জীবন্ত মন্ত্র। নকল মন্ত্রের কী প্রয়োজন বলো বন্ধু!
“মানুষ ভজ, মানুষ ভজ মন
ছেড়ে মন্ত্র তন্ত্র যন্ত্র তন্ত্র
মানুষকে করো আপন।
মানুষ ভজ, মানুষ ভজ মন”