চোখের সম্মুখে ভাঙিল প্রাচীর
বয়ে গেলো খড় কুটো,
চারিদিকে আজ হাহাকার শুধু
দানা নেই একমুঠো ।

ক্ষিদের জ্বালায় বুক ছটপট
তৃষ্ণায় গলা শুকনো,
বদ্ধ কক্ষে আগল লাগিয়ে
করছি "শেষের" যত্ন ।

ডেকে ছিলো তারা, বলেছিলো জোরে-
তাড়াতাড়ি আয় বেরিয়ে,
চোখের ইশারায় জানিয়ে ছিলাম
কত স্মৃতি আছে জড়িয়ে ।


মনে পড়ে সেকাল, কত আদরে
বেধেঁ ছিলাম ঘরখানা,
তেত্রিশটা বছর পার হয়ে গেলো
সে অতীত কল্পনা ।

ছোটো ছোটো স্মৃতি, এই ঘর জুড়ে
চারিদিকে ছিলো ছড়িয়ে,
পৃথিবীর বুকে মায়া ভরা যোগ
একদিন যাবে হারিয়ে ।

মনে পড়ে যায় ছোট্ট খোকার
বায়না ধরা খেলনা,
টম, পুষি, ঘোড়া, ছোট্ট রোবোট
সব হয়ে যাবে ফেলনা ।

শোঁ শোঁ শোঁ ঝড়ের শব্দে
কানে লেগে গেলো তালা,
জলের তোড়ে ঘরখানা মোর
কাঁপনে ঝালাপালা ।

স্মৃতির কোটোরে যত্ন করে
ধরে রেখেছি স্মৃতি,
আর নয় বুঝি, সেই ক্ষণে আজি
নেই কোনো নিস্কৃতি ।

বড় ছিলো আশা, মরণের আগে
মুখগুলো থাকে পাশে,
বিধাতার খেলা, বড় অবহেলা
করুণ নি:শ্বাসে ।

টলমল ঘর, এলবুঝি ক্ষণ
বাড়ছে বুকের কাঁপন-
নি:শ্বাসে আজ বেঁচে থাকি যেনো
করেও মৃত্যুবরণ ।

চারিদিকে জল, কিসের এই ফল ?
বিধাতার একি খেলা !
প্রকৃতির কোপে, মৃত্যু মিছিলে
ভাসছে আজ কেরালা ।


[বন্যা দূর্গত কোরালার, কোনো এক পরিবারের প্রধানের আত্মকাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করলাম ।]