বুকে তোমার বারুদ ছিল, অকুতোভয় মন।
স্বাধীনতার স্বপ্নে তোমার জীবন মরণ পণ।
বিশ্বাসের শক্তি আর সংকল্পের জোর,
দেশ সেবার কর্ম তোমার, সারা জীবন ভোর।
ভারত মায়ের আপন হাতে গড়া সন্তান,তুমি,
আত্মবলিদানে তোমার, জাগলো ভারত ভূমি।
তোমায় জন্মদিয়ে ধন্য, মোহবনী গ্রাম,
মেদিনীপুরের গর্ব তুমি, শহিদ ক্ষুদিরাম।
দিদি তোমায় কিনেছিলো ক্ষুদের বিনিময়ে,
শৈশব কাটলো তোমার দিদিরই আশ্রয়ে।
দাসপুরের হাটগেছিয়ায় ছেলেবেলা কাটে,
ডাক লুন্ঠন করলে তুমি বড়শিমুলিয়ার মাঠে।
হ্যামিলটন স্কুল জুড়ে ছড়িয়ে তোমার স্মৃতি,
স্বাধীনতার শপথ নিয়ে পড়াশোনায় ইতি।
অস্ত্রগুরু হেমচন্দ্রের শিশ্যত্ব তুমি নিলে,
আত্মবলিদানের পথ, তুমিই দেখিয়েছিলে।
‘বন্দেমাতরম’ পত্রিকা বিলি সত্যেন বোসের ডাকে,
বাল্যকালেই মারলে ঘুষি  পুলিশ সিপাইয়ের নাকে।
‘বেত মেরে তুই  মা ভোলাবি’- সুশীলের সেই লড়াই,
ভরা কোর্টে খর্ব হল কিংস ফোর্ডের বড়াই।
বিপ্লবীরা শপথ নিলো, বড়লাটের দিন শেষ।
স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর তখন সোনার দেশ।
সাহেব নিধন করতে হবে মুজফফরপুর গিয়ে,
ক্ষুদিরাম চললো সেথায় প্রফুল্লকে নিয়ে।
সাহেবের ফিটন গাড়িতে বোমা মারলো তাঁরা,
সাহেবের তো চওড়া কপাল, আগেও কেটেছে ফাঁড়া।
বইয়ের মধ্যে বোমা পাঠালো বড়লাটের ঘরে।
বোমার খবর ফাঁস হল, সাহেবের বদলি হওয়্যার পরে।
এবারো সাহেব বেঁচে গেলেন, ফিটনে ছিলেন নারী,
বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন সেই ফিটন গাড়ি।
প্রফুল্ল চাকী আত্মঘাতী,পলাতক ক্ষুদিরাম।
আসামী নিখোঁজ, রাতভোর তাই তল্লাশি অবিরাম।
অবশেষে তিনি পড়লেন ধরা, কারাবাস হল তাঁর।
মুজফফরপুর জেলে চলেছিল কতই অত্যাচার।
১৯০৮ এর ১১ই আগষ্ট, ক্ষুদিরামের ফাঁসি,
ফুলের কুঁড়ির ঝরে পড়া দেখলো ভারতবাসী।
এক ক্ষুদিরাম দীপ নিভে গিয়ে, শত ফুল বিকশিত,
অগ্নিশিশুর অগ্নিমন্ত্রে, স্বাধীনতার বীজ  অঙ্কুরিত।
যুগে যুগে তুমি স্বপ্ন দেখাও, তরুণের বিপ্লবে।
তুমি বেঁচে আছো শিরায় শিরায়, বেঁচে আছো অনুভবে।