শৈশবের পুজো মানে ক্যাপ-বন্দুক-বাজি।
সোনালী সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে রাজী।
শৈশবের পুজো মানেই নতুন জামার গন্ধ,
ক'টা দিনের মুক্তির স্বাদ, বইয়ের ব্যাগটি বন্ধ।
বাবার সাথে ম্যাপ নিয়ে ঠাকুর দেখার ধূম।
মনেপ্রাণে দেদার খুশি, চোখে নেইকো ঘুম।
মায়ের মেক-আপ বক্সে হয় মেয়ের হাতেখড়ি,
ধেবড়ে যাওয়া লিপস্টিকেও আহা মরি-মরি।
পুজো মানেই নতুন কিছু অন্য দিনের থেকে,
চারটে দিন অনেক কিছুই মনে দিয়ে যায় এঁকে।
শিশু থেকে কিশোর হলে ভিন্ন পুজোর স্বাদ।
কিশোর খোঁজে সদ্য হওয়া কোনো কিশোরীর হাত।
পুজো মানেই প্রথম শাড়ি, বন্ধুত্বের ছোঁয়া।
কৈশোরের হাতেখড়ি সিগারেটের ধোঁয়া।
পুজোতেই প্রথম শুরু বন্ধুদের ঠেক,
অন্যভাবে চলার শুরু, অন্যরকম ব্রেক।
কারণসুধার নবপরিচয়, হুইস্কির স্বাদ,
উড়ছে জীবন, পুড়ছে জীবন, কাটছে অবসাদ।
কিশোর-কিশোরী বাইক রাইড, পথচলা শুরু।
পাছে কেউ দেখে ফেলে তাই বক্ষ দুরুদুরু।
পুজো মানে মুক্তধারা, নতুন জীবন পাওয়া।
এই জন্যেই মাকে ডাকা, মায়ের কাছে যাওয়া।
মহাষ্টমীর অঞ্জলীতে মা-বোনেদের ভীড়।
মাগো তুমি রক্ষা কোরো সব শান্তির নীড়।
নববধুর সিঁদুর খেলা, জীবন হয় ধন্য।
সবার জন্য শারদীয়া তাই এত অনন্য।
মন্ডপেতে দেবীর পুজো, বাড়িতে পেটপুজো।
বউ-ঝি'রা তাই রান্নাঘরে খেটে হয় কুঁজো।
রকমারী সব রান্নাতে রসনা বলে জয়মা।
মাদুর্গা তুইই বল এসব ছাড়া হয়মা?
বুড়ো-বুড়ি ধুতি-শাড়ি, আড্ডা জমে ভারী।
দেখছে চেয়ে কচি-কাঁচা মারছে শুধুই ঝাড়ি।
বাড়িতে ফেরে পটলা-মদন বাইরে ছিল যত।
মন্ডপে তাই আড্ডা জমে সিগারেট পোড়ে কত।
সবার জন্যে মা আসে তাই সেই কৈলাশ থেকে।
মা দুর্গাও বেজায় খুশি এসব কান্ড দেখে।