পুজো গেলেই তোড়জোড় কবে আসবে শিশুমেলা?
কোন শিল্পী আসবে সেই নিয়ে কাটে সারা বেলা।
কে করবে উদ্বোধন আর কে কাটবে ফিতে?
কার কাছে যেতে হবে আমন্ত্রণ পত্র দিতে।
স্টল কত হবে? মাঝখানে কতটা থাকবে ফাঁকা?
এসব নিয়ে সারাদিন আলোচনাতে মশগুল থাকা।
কে হবে সেক্রেটারী? কে থাকবে অন্যান্য পদে?
সেই নিয়ে খবর হবে, পেপারে লিখবে বিশদে।
এই মেলা সাবালক, আর নেই সেদিনের শিশু,
তাই এতো আলোচনা, এই সময়ের একটাই ইস্যু।
সব মনে বাস করে কচি কাঁচা শিশুদের দল,
মেলার গন্ধে তাই চারিদিকে এত কোলাহল।
এই মেলা গর্বের, ঘাটালের আবেগের মেলা।
‘চায়ে পে চর্চা’ হয় এটা নিয়ে রোজ চার বেলা।
কত টাকা ডাক ওঠে সেটা প্রকাশ্যে যায় জানা,
এর পর লিস্ট হয় কোন শিল্পীদের হবে আনা।
দাবী থাকে অরিজিৎ, শ্রেয়া বা নেহা কক্কর।
আশেপাশের সব মেলাকে দিতেই হবে টক্কর।
ইন্ডিয়ান আইডল আর সারেগামাপার কুশীলব,
লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে আনা হয় শিল্পী সব।
ইউটিউব, ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার চলে,
অ্যাঙ্কররা অনেক সময় বাড়তি কথা বলে।
নাচ গান আবৃত্তি চলে সারাদিন জুড়ে,
দশটা দিন কেটে যায় মন মাতানো সুরে।
বলতে বলতে চলেই এলো আবার শিশুমেলা,
বাবার সাথে মেলায় গিয়ে চড়বো নাগরদোলা।
শিক্ষিত আলুভাজা খাব, খাব আইস চপ,
জিলিপি খাব, ভেলপুরি, ফুচকা গপাগপ।
হাতে এবার ট্যাটু করবে, জেল লাগাবে চুলে,
জেল্লা দিয়ে মেলার মাঠে চলবে কলার তুলে।
মেলায় নতুন প্রেমও হবে, দশ দিনেতেই শেষ,
সিসি টিভি সাক্ষী আছে, খেতেও পারো কেস।
পকেট তোমার সামলে রেখো, আছে পকেটমার,
হাত তুলে দেবে মেলা কমিটি, পকেটটা তোমার।
কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়, নিজ দায়িত্বে রাখুন মাল,
সমাজের চালচিত্রের এমন দুর্বিষহ হাল।