দোল পূর্ণিমার চাঁদ শুধু তোমার জন্যই ওঠে,
তোমার জন্যই বসন্ত আসে,
নদীর জল খেলা করে জোছনা আলোয়,
বালুকণাগুলোকে মনে হয় হীরে-মানিক।
তোমার জন্যই সোঁদা মাটির বুকে ঝরে পড়ে পলাশ-শিমুল
বুলবুলি আর কোকিল গেয়ে ওঠে বসন্তের গান।
তোমার জন্যই মুকুল আসে গাছে গাছে।
তোমার জন্যই সেজে ওঠে বসুন্ধরা।
তোমার শরীরেও বসন্ত আসে…
প্রকৃতির রঙ আর গন্ধ তোমার শরীরে লেগে থাকে।
বসন্তের উপস্থিতি জানান দিয়ে যায়,
খোলা চুল নিয়ে খেলা করে বসন্তের বাতাস।
বসন্ত বড় বিরহের ঋতু , আবার প্রেমেরও…
গাছে নতুন পাতা, ফুলের সমারোহ…
এসব দেখে কিশোরী বেলার প্রেম বড্ড মনে পড়ে।
হারিয়ে যাও তুমি কোথায় বালিকা?
আমিও কোথায় হারিয়ে যাই…
শিমুল-পলাশ আর শাল ফুলে বেলা ডোবার মাঠে।
বীরভোগ্যা রুক্ষ মাটির রূঢ়তা ঢাকা বসন্তে।
কালবেলা হয়ত একেই বলে সুন্দরী।
খোয়াই এর বাঁকের মতই তোমার শরীরের বঙ্কিম ভঙ্গিমা,
বসন্ত হওয়া কে খুব হিংসে হয় ,
তোমার অবিন্যস্ত চুলে আর পেলব শরীর
বসন্ত হাওয়ার সাথে নির্ভেজাল খেলা করে।
কালিদাস কে বলে দিও মেঘদূত নয়,
আমায় যেন বসন্তের হাওয়া রূপে জন্ম দেন পরের রচনা তে।
আমি অদৃশ্য হয়ে খেলে বেড়াবো তোমার শরীর আর মন জুড়ে।
বসন্ত বাতাস হয়ে তোমায় বনফুলের গন্ধ বিলাবো।
দোলপূর্ণিমার রাতে একলা ছাদে খোলা চুলে দাঁড়িও,
কথা দিলাম চাঁদের আলোয় ডানা মেলে আমি আসবো।
মনে রঙের জোয়ার নিয়ে আমি আসবো…
তোমার মনে বসন্তের ছোঁয়া নিয়ে আসতে আমাকে হবেই।
বসন্তে যদি শাল মহুয়ার জঙ্গলে আসো,
নতুবা নাম ভুলে যাওয়া ছোট্টো নদীর পাড়ে।
সোনাঝুড়ির সাথে বসন্তবিলাপে আমি সাড়া দেবো।
আমায় তুমি উপেক্ষা কোরো না তখন।
তোমার পাটভাঙা সিফনের শাড়ির আঁচল,
কপালের লাল টকটকে টিপ
আর খোলা চুলের বনফুলের শোভাতেই আমি আসবো।
আমি আসবো বসন্তের সমীরণ হয়ে।
কথা দাও যদি আসি অবজ্ঞা করবে না…
ফিরিয়ে দেবেনা আমায়।