ভোরের আকাশে আজ উদয় ভানুর রক্তরাগ,
স্নিগ্ধ জলে নরম রোদের পরশ বিলি কেটে দেয়।
কচি পাতারাও রোদের আভাতে লাজুক হাসিতে মগ্ন আজ।
ঠিক যেন শিবালয়কে মদনদেব সাজিয়েছেন নিপুন হাতে।
পুষ্প,পল্লব আর পত্রে সেজেছে আজ প্রকৃতি দেবী,
ঠিক সেদিন যেমন সেজেছিলেন অষ্টাদশী পার্বতী।
হে কুমারসম্ভবের কবি,
আজও কি তোমার কলম স্থবির থাকবে স্থানুর মত?

এই প্রভাতে এসো সেজে উঠি প্রকৃতির মত করে।
একাত্ম হই অন্তরঙ্গে আর বহিঃরঙ্গে,
মনের রঙ আজ দেহেও লাগুক,
ঠিক যেমন বনে লেগেছে ফাগুনের রঙ।
এসো প্রিয়, তোমায় রাঙিয়ে দিই আজ,
আপন মনের মাধুরী মিশায়ে যেমন ছবি আঁকে কবি,
ঠিক তেমন করে আজ সাজিয়ে দেবো তোমায়।


এসো ভ্রমরের মত আজ ফুলের সৌরভে মেতে উঠি।
মনের মদিরায় মিশে যাক বসন্তের সমীরণ আর ফুলের সুবাস।
এসো দোল পূর্ণিমার সন্ধ্যায়  জ্যোৎস্না পান করি চকোরের মত,
ঠিক যেমন করে বলরাম পান করতেন  কারণসুধা।
শেষ রাতে চাঁদ ডুবে গেলে মাতালের মত আবেশিত হব।

যুগে যুগে এই বসন্তে মেতেছে কপোত-কপোতিরা,
ভ্রমরের গুঞ্জন যেন গান হয়ে বেজেছে বসন্তে।
কত কবির প্রলাপ হয়েছে কবিতা।
নগরের পানশালায় কত জারজ কবিতার সমাধি হয়েছে,
তা পানশালার মদিরার পাত্ররা মনে রেখেছে।
এরকমই এক বসন্তে নন্দদুলাল খেলেছিলো দোল,
শতেক গোপিনীর মনেও সেদিন লেগেছিল বসন্তের রঙ।
সেদিন যমুনার বক্ষেও খেলা করেছিল চাঁদের আলো,
বৃন্দাবনের কুঞ্জে কুঞ্জে ভ্রমরের গুঞ্জন গান হয়ে বেজেছিল।
গোপের ধেনুরাও সেদিনি নেচে উঠেছিল সেই গানে।

আজও বসন্ত আসে, প্রকৃতি দেবী সেজে ওঠে,
আমাদের মনেও লাগে বসন্তের দোলা।
আরও সহশ্র বছর পরেও বসন্ত আসবে…
দেহ-মন সেজে উঠবে বসন্তের ছোঁয়ায়।