যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে থাকবে, ইউক্যালিপটাসের
শোঁ-শোঁ চিৎকারে, অল্প তাপমাত্রার মেঠো দুপুরবেলায়
ভুরু দুইয়ের ফাঁকে অচেনা উৎকণ্ঠা
আর তার মাঝে তোমার কালজয়ী ভেঙে ভেঙে কথা বলা,
সবুজ হলুদ খয়েরি বেগুনী ঘাসের অনেক রঙ
আর ঘন চুলের নাক গোঁজা অশান্ত চোখ বুঁজে
এখানেই আমাদের খড়ের ঘর এখানেই যত খুনসুটি,
সকালে লাঙল হাতে বেরিয়ে আলো ডোবার আগেই
বাদুড়ের মত ঝটপটিয়ে ঝুলে পড়া-
এমনটাই।
নাহয় খোপায় ফুলটা গুঁজে দিলাম, পিছনে প্রতিবিম্বে
ধানের শীষ বোলাতে বোলাতে,
গুনগুনিয়ে ছড়া বলাটা তোমার বড় মসৃণ
হেমন্ত আরো বাকী, আর সুঘ্রাণ
সে বাতাস ক্ষমা করে দিয়েছে জ্বলে যাওয়া দিনগুলো।
দখিনে আধা ক্রোশ পথে, রাঙতা নদী
ফসলের পরে তার জলে বাড়ন্ত,
ওখানেই আগের পূর্ণিমায়, উঁকি দিয়ে চাঁদ দেখেছিলে
বনতুলসীর ঝোপে জ্যোৎস্না কূলগাছে
আমি বাঁশি বাজাতে পারিনি, ঠোঁটে হারিয়েছিল ভাষা
আলো ঝিমিয়েছিল উড়ে যাওয়া পেঁচার গতিতে।
গেঁয়ো কথাবুড়ি মনে আছে, অতীতের দ্যোতক-
ক্ষয়ে যাওয়া গাঢ় শালপাতার বিছানায়
প্রতি অমাবস্যায় পা টেপে, অকথা কুকথা শোনে
আমরা সে দেশে অচেনা, শত যোজন শেষে আমাদের চাওয়া,
ভালোবাসার ভিড়ের মতো।
একরোখা পাথরের গোঁজে
শিরা পেঁচিয়ে বেড়ে ওঠা গুল্মের মতো, যা-কিছু আবশ্যক
আমার শিকড়ে শিকড়ে সেটাই তুমি,
স্মৃতি হারাবে না মাটি, এতো চিরপ্রচলিত লোককথা-
কোটি যুগ আগের মোড়লও জানে
সে কথা।