আমি এখন ত্রিশোর্ধ জীবনের পথে
ধীরে ধীরে ভালোবেসেছি
এই বেঁচে থাকার দিন গুলিকে।
এতগুলো বছর পেরিয়ে এলাম অথচ ভাবতে পারিনা
এগিয়ে চলেছি এক নিশ্চিত নির্মম উপহার পেতে।
আজও যখন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পথ দিয়ে
পেরিয়ে যায় খুব স্পষ্টভাবে মনে পড়ে আমার ছেলেবেলা।
শিরিষ গাছের ছায়ায় ধুলো-বালির সেই সংসার।
মেঠো পথে গ্রামের পরে গ্রাম পেরিয়ে পৌঁছে যেতাম
সোনালী স্বপ্নের সেই সব দিনে দেবদারু গাছের ছায়াতে ।
এই তো সেদিন দেখলাম স্কুলের গেটের পাশে কৃষ্ণচূড়া
আগের মতোয় ফুলের শোভা নিয়ে প্রেম জাগাচ্ছে
কিশোর মনে, ঠিক যেমনভাবে আমি প্রেমে পড়েছিলাম।
দোতলার ক্লাসরুম থেকে রোজ দেখতাম সে চলে যেত
নিজের খেয়ালে , কখনও কখনও বন্ধুদের সাথে মিষ্টি হাসি
হাসতে হাসতে।
আমার ইচ্ছে করত লাল রাঙা কৃষ্ণচূড়া দিয়ে আসি হঠাৎ করে।
জানিয়ে আসি ওগো কাজল পড়া সুহাসিনী আমি রোজ তোমায় দেখি, তোমার কথা ভাবি।
এখনও মনে জাগে সেই সব কল্পনায় ভালো থাকার দিনগুলির কথা, একটু আনমনা হাসি হাসতে থাকি।
কিন্তু জীবনের বাস্তবতা যে এত কঠিন তখন
তার খবর কে রাখে?
এখন যত দিন যাচ্ছে ততই মনের মধ্যে একটা
অচেনা এবং নিষ্ঠুর ভয় জাগে।
ফেসবুক পেজে ভেসে উঠে এমন কিছু অতি পরিচিত মানুষের
না থাকার সংবাদ যা দেখে নিজেকে স্থির রাখা যায় না।
হঠাৎ হঠাৎ সব খবর আসে মাঝবয়সি আকবর স্যার,তপন কাকু কিম্বা সোজোমামা অথবা বন্ধু বিদ্যুৎ আর আমাদের মাঝে নেই।
জীবনের উপর মায়া আরও গাঢ় হয়
আর ভয়ে শুকিয়ে যায় বুক।
তবুও জোর করে হাসতে চেষ্টা করি
কৌতূহল জাগে মনে কি জানি কেমন করে হবে
তারসাথে পরিচয়!