পৃথির বুকে কি বিশাল শহর?
চলমান মানুষ, উড়ন্ত ধোঁয়ায় ঢাকা।
সেখানে সন্ধ্যামালতী ফুটে উঠলেও,
কেউ দেখে না, শোঁকে না তার গন্ধ!
কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁধা, হাজারো গল্প!
যেগুলো বাতাসে হারিয়ে যায় প্রতিদিন,
অপ্রকাশিত, অজানা।
শুভ্র গোলাপ কোথায়?
কোথায় সেই মানুষ,
যার কাঁধে মাথা রেখে ভাঙা কল্পনার গল্প শোনা যেতো?
কোথায় সেই জোনাকির আলো,
যা ছড়িয়ে দিতো রাতের আকাশে শান্তির আশ্রয়?
এই শহরে নেই কণ্ঠের মিষ্টি সুর,
নেই কেউ, যার সাথে দু’কাপ চায়ের আড্ডায়
ভেসে বেড়ানো যেতো স্মৃতির ভেলায়।
এখানে সবাই মশগুল নিজেদের মিছে দুনিয়ায়,
ইট পাথরে গড়া দেয়ালে আটকে গেছে,
মানুষের হাসি, কান্না— সবই বন্ধক রাখা।
এ শহরে লাশেরা হাঁটে,
বুকভরা শূন্যতা নিয়ে ঘোরে রাস্তায় রাস্তায়।
আত্মা শুকিয়ে গেছে,
শুধু দেহ দাঁড়িয়ে আছে— যেন জীবিত প্রেতাত্মা।
নেই কেউ আত্মশুদ্ধির সন্ধানে,
নেই কেউ নিজের কাছে ফিরে আসার অপেক্ষায়।
কেউ হয়তো পুড়ে যাবে শহরের আগুনে,
কেউ হয়তো ডুবে যাবে নরকের কাঁটায়,
আর কেউ হয়তো ট্রেনের নিচে কাঁটা পড়ে ঝরাবে জীবন।
তবু কেউ থামাবে না,
কেউ হাত বাড়াবে না,
এ শহরে কেউ দেবদূত হয়ে আসবে না।
মৃত্যুর ছায়া অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায়,
যমরাজের দমবন্ধ করা মিছিলে,
যেখানে সবাই চলেছে অজানা গন্তব্যের পথে—
আজরাইলের শিকল বেঁধে,
এক বিশাল কবরখানার নীরব দর্শক হয়ে।
আর কঙ্কালগুলো মুক্তির নেশায় মেতে ওঠে,
মাতালের বেশে।
দিন ফুরিয়ে রাত আসে,
নৃশংসতাযর ঝংকারে,
আজরাইল আজ লজ্জিত।
আমি মৃত্যু নগরীর চার তলায়,
শুধুই গুনছি অপেক্ষার প্রহর।
-----