বালুর দেশে হারায় মন, কোথায় যেন দূরে,
জীবনের বুকে বাজে সুর, মর্মের নীল সুরে।
বিছিন্ন পাতা বায়ুর তালে, ঝড়ে যায় উড়ে,
মরুর মাঝে খুঁজে বেড়াই, সত্তা হারা নীড়ে।

পায়ে জড়ায় বালির ঘূর্ণি, হাঁটিতে ভারি হয়,
চোখে দেখার মাঝে কিছু, চেতনা তবু রয়।
মায়ার ছায়া ঘিরে আসে, দেহের ভাঙন ক্ষত,
চুপে চুপে পাড়ি দেয় সব, সৃষ্টির গভীর পথ।

রাত্রির শেষে আঁধার কাটে, নতুন সূর্য ওঠে,
দীপ্ত মিশে জীবনের, পুরানো ক্ষতের সাথে।
জীবন নদী বয়ে চলে, তীরের বাঁধন ভাঙে,
অবুঝ মনের পিঞ্জরে, সত্তা আবার জাগে।

অন্তরের গোপন কথায় দেখো সৃষ্টিকর্তা হাসে,
বালুর ঘরে বন্দী সত্তা, মৃত্তিকার বুকে, ভাসে।
জানার মাঝে অজানাতে, জড়ায় মায়ার ফাঁদ,
এ জীবনের প্রান্ত রেখায়, দেখিl সবটাই সাধ।

মরুর দেশে খুঁজতে গিয়ে, সবই বালি হয়,
তবু মনের গভীর ছায়ায়, সত্যি কিছু রয়।


ভাবার্থ:
এই কবিতাটি একটি প্রতীকী উপস্থাপনা, যেখানে বালির রাজ্য এবং বালুময় দেহ মানুষের সাময়িক অস্তিত্বের এবং জীবনের ক্ষণস্থায়ী বাস্তবতার রূপক। বালুর মধ্যে গড়াগড়ি মানে, জীবনের প্রতিদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদানে আমরা নিমজ্জিত থাকি, যেন নিজের অস্তিত্বটাই হারিয়ে যায়। মরুর ঝড় জীবনের কঠিন পরিস্থিতি বা বাস্তবতার রূপক যা আমাদের সত্তাকে ছিনিয়ে নেয় বা পরিবর্তিত করে। চেতনায় ফিরে এসে, মানুষ বুঝতে পারে যে সে বালুর ঘরে বন্দী, অর্থাৎ, এই জাগতিক জীবন বা পৃথিবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। কবি জানেন যে সৃষ্টিকর্তাই সব জানেন, কিন্তু মানুষ এই জ্ঞানের থেকে বঞ্চিত থাকে বা ভান করে যে সে সব জানে না।
তাইতো কবির মনে বেজে উঠে;
"বালুর রাজ্যে বালুময় দেহ করিছে গড়াগড়ি;
মরুর ঝড়ে ছিনিয়া নিল সত্তা!
চেতনা আসিলে দেখিলাম বালুর ঘরে বন্দী;
না জানার ভান, জানে সৃষ্টিকর্তা!"
---