অহংকারে জ্বলে যে মন, জ্ঞান তবু কাঁদে নীরবে,
বৃক্ষ যেমন উচ্চ হয়, শিকড় তার নিচে পড়ে রবে।
মানুষ যখন শিখে কেবল, জানারই খেলা খেলে,
অহংকারে ভেসে গিয়ে, হৃদয় তাহার মরে তলে।
জ্ঞান নয় গর্বের তরে, আসে মনকে বাঁধতে,
যতই মেধা গৌরবে ওঠে, ততই ফাঁদে পড়তে।
প্রকৃত শিক্ষা নেয় যে জন, সে জানে নত হতে,
মেধার গরবে দীন হয়ে, পরাজয় হয় সতে।
দানব যে আজ ঘুমিয়ে আছে, মানুষেরই অন্তরে,
অহংকারে খোঁচা দিলে, সে জাগে ভয়াবহ দরে।
সেই জন সফল হয় সত্য, যে দমাতে পারে প্রাণ,
মেধার গরবে জ্বলে না সে, করে না কভু অপমান।
প্রকৃতির শিক্ষা গ্রহণ করে, বিনম্র সে হয় বটে,
বইয়ের পাতায় মিলে না যা, মন বলে কহতে।
মেধার গরজ করিয়া যে জন, উঠাইলো শির,
কি করে বলি তাহারে, তুমি যে পরাজিত বীর।
কবিতার বিশ্লেষণ:
জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি মানুষের অহঙ্কার বোধটিও বাড়তে থাকে;
এটি মানুষের সহজাত ব্যধি।
এ ব্যধিকে সতর্কতার সাথে দূরে সরিয়ে এগিয়ে যেতে হয়;
সমাজ ব্যবস্থা ঐভাবে সাজাতে হবে।
না হলে এই রোগটি জ্ঞানীকে জ্ঞান পাপী বানিয়ে ছাড়বে।
এবং তার মাঝে তৈরি হবে একটি মানুষরূপী ভয়াবহ দানব,
যিনি একে দমিয়ে রাখতে পারেন তিনিই সফল এবং সু জ্ঞানি।
শিক্ষা এবং প্রকৃত শিক্ষার মধ্যে যেমন পার্থক্য আছে;
ঠিক তেমনি মেধাবী ও প্রকৃত মেধাবী শব্দের মধ্যেও গুণগত পার্থক্য আছে।
এ পার্থক্য আমরা অনেকেই বুঝি না, আবার বুঝলেও মেনে নেই না।
এগুলো বুঝতে হলে বই থেকে নয়, নিতে হবে প্রকৃতির শিক্ষা।