পঁচিশ কি ছাব্বিশ বছরের একটি মেয়ে
একটা কাজে আমার অফিসে আসে
তাকে একনজর দেখেই
যে কোনো পুরুষ তার প্রেমে পড়বে
সুঠাম দেহ,মুখে যেনো শ্রাবস্তীর কারুকার্য।
প্রথমদিন দেখেছিলাম সাদা রঙের শাড়িতে
দেখে ভীষণ বিষন্ন হয়েছিলো মন
মনে মনে মনকে প্রশ্ন করেছিলাম ইস
এত অল্প বয়সে বিধবা হলো মেয়েটা?
ভেবে দিশেহারা হলাম
একা একা কি ভাবে কাটাবে এত্ত বড় জীবন!
দ্বিতীয়দিন দেখলাম কালো রঙের শাড়িতে
গৌর মুখখানা ঘিরে
কি এক মলিনতয় ছেয়ে আছে
ইচ্ছে হচ্ছিলো কাছে গিয়ে দুটি কথা বলতে
সহানুভূতির সাথে শান্তনা দিতে
কিন্তু অপরিচিত মানুষ আমি
কি ভাবতে কি ভেবে বসে তাই সম্ভব হলো না।
তৃতীয়দিন দেখলাম নীল রঙের শাড়িতে
বেদনায় কুকড়ে যাওয়া হৃদয় তার
প্রতিটা মুহুর্ত কাকে যেনো খুঁজে ফিরছে
আঁখি দুটি বড্ড উদাসীন
কি যে মায়া ওই দুটি আঁখি যুগলে
মন বারংবার চাইছিল প্রেমে পড়তে।
হয়তো প্রেমে হাবুডুবু খেয়েও ছিলাম
কিন্তু মেয়েটি তার কিছুই জানেনা।
চতুর্থদিন দেখলাম গোলাপি রঙের শাড়িতে
দীঘল কালো চুল তার উড়ছে বাতাসে
মুখে লেগে আছে ভোরের নবীন সুর্যের হাসি
হাওয়ায় হাওয়ায় দুলছে সে
ধুক করে উঠলো বুক, ওকি কারো প্রেমে পড়েছে......
পরক্ষণেই সামলে নিলাম নিজেকে।
পঞ্চমদিন বাসন্তি শাড়িতে সেজে
বান্ধুবীদের সাথে মেতেছে বসন্ত উৎসবে।
চোখে এঁকেছে কাজল, গা ভর্তি ফুলের গয়না
মাথায় পরেছে ফুলের মুকুট,
রিনিঝিনি পায়েল বাজছে পায়
বসন্তের সব রং যেনো উপছে পড়েছে-
নিজেরি অজান্তে তৃপ্ত হাসি হেসে উঠলাম।
ষষ্ঠদিন শরীর জুড়ে উঠেছে সবুজ শাড়ি
কি অপরূপ লাবন্য ঘেরা মুখ
সবুজ শ্যামলীমা তারব
সব সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে ওর মাঝে।
মুগ্ধ হয়ে অপলক তাকিয়ে রইলাম
বিধাতার কি অপরূপ দান
মনে মনে লজ্জিত হলাম ওতো বিধবা নয় কুমারি
ছিছি কি না কি ভেবেছিলাম সেই প্রথম দিন ।
আচ্ছা ও বিধবা না সধবা নাকি কুমারি
তা নিয়ে আমি এত ভাবছি কেনো!
আমি না একটা..…....বুকে সাহস নিয়ে
মেয়েটিকে কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু
সুযোগ না দিয়ে মুচকি হেসে চলে গেলো,
সে চলে যাওয়ায় হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
সপ্তমদিন দেখলাম লাল রঙের শাড়িতে
লাল ব্লাউজ, কপাল জুড়ে লাল টিপ
ঠোঁটে লাল রঙের লিপিস্টিক ,
খোঁপায় গুজেছে ফুল, গলায় জড়োয়া গহনায়
মানুষ এত সুন্দর হতে পারে!
ধরণী পারে যেন আকাশ থেকে কোনো পরী নেমে এসেছে।
সাত রঙের শাড়িতে সাত বেশ দেখে দেখে
আমি বাক হারিয়ে ফেললাম।
ওর প্রেমে টোলেছিলাম কিন্তু...
ওকি পড়েছিলো আমার নিটোল প্রেমে?
২৫/০১/২২