আমি একজন নগণ্য মানুষ,
নিজেরই ভান্ডয় নেই একচিলতে সঞ্চিত জ্ঞান
জানা নেই মানুষকে কি ভাবে করতে হয় মূল্যায়ন
অন্যকে জ্ঞান দিব সে দুঃসাহস কোথায় আমার!
তবু ঘাত-প্রতিঘাতের জীবন থেমে থাকার নয়
লাঞ্চিত হয় অপমানিত হয় অবহেলিত হয়
তবু গুণীর সুধা নির্জাস আহরণে
বহতা নদীর মত বয়ে চলে এঘাট ওঘাট সেঘাট।
অতঃপর স্ফটিক সঞ্চয় থেকে বলি
বাড়িতে অতিথি এলে অতিথিকে যদি
আমার প্লেটটিতে দেওয়া হয় খেতে,
তা দেখে প্লেটটি কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিবো?
আমারি চেয়ারটিতে যদি দেওয়া হয় বসতে
তবে কি চেয়ারটি ভেঙে ফেলে দিবো?
নাকি চিৎকার করে বাড়ি-ঘর মাথায় তুলবো?
নাকি আমারি প্লেটে খেতে দেওয়ার অপরাধে
আমারি চেয়ারে বসতে দেওয়ার অপরাধে আমি তাকে করবো অপমান?
নাকি তিক্ততায় ঘর ছেড়ে চলে যাবো ?
নাকি সাদরে টেনে নিবো বুকে?
অতঃপর আরো একটু খুলেই বলি
আমার ঘর, ঘরের মানুষগুলো আসবাব পত্র সব রয়ে যাবে ঠিকঠাক
শুধু চলে যাবে ওই ক্ষণিকের অতিথি।
আমি কি, আমি কে, সে ঢাক আমি কেন পিটাবো!
প্রবাদে তো আছে বৃক্ষ তোমার নাম কি?
ফলেই পরিচয়।
অতঃপর আমারি ইগো কুরে কুরে খায় আমারি অবয়ব
কেন আমি মেনে নিতে পারিনা,
কেন আমি ভাবি, আমার চেয়ার টেবিলে কেউ বসা
আমার প্লেট-গ্লাসে কেউ খাওয়া মানে আমাকে ছোট করা- আমাকে অপমান করা!
কিন্তু তাই কি!
অতঃপর আমি আরও একটু খুলে বলি
অহংকারের অন্ধকারে ডুবে আছে আমার মন
পঞ্চ কংকালের স্তুপ, মাংসের পাহাড়ে রক্তের স্রোত-
বিশাল সবুজ চারপাশ ধূসর ধূসর, তামাটে তামাটে মনে হয়।
আমি আমগাছ নাকি নারকেলগাছ,
আমি বাঘ নাকি খ্যাক শিয়াল
আমি হারমনি নাকি তবলা, শিল্পী নাকি কবি, ডাক্তার নাকি উকিল, কুলি, মজুর, কৃষক
আমি কে, আমি কি,
নিজেই নিজের গান গাওয়ার কোন প্রয়োজন দেখিনা।
আমি কে আমার ব্যবহারে সেটা বলে
ওই ক্ষণিকের অতিথি হওয়া মানুষটি।
আমি কে আমি কি সেটা বলে দেবে আমার চারপাশে চেনাজানা মেলামেশা মানুষগুলো
আমি কে আমি কি সেটা বলে দেবে আমারি পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আমার বন্ধু বান্ধব।
অতিথি চলে যাবে, চেয়ার টেবিল, প্লেট গ্লাস
পরিবার পরিজন, সাজানো বাগান
বাগানে ফোটা কয়েকটি গোলাপ,
সব রয়ে যাবে ঠিকঠাক।
এরা যে সব আমার,আমারি স্বজন
স্বজনকে ছোট করে দেখার কোন অবকাশ এখানে নেই।
এরাই যে আমার আমার প্রাণ,আমার অক্সিজেন,
এরা আমার জ্বলে জ্বলে তুখোড় সূর্য, চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করা সুপারনোভার প্রান্তধারা।
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯