বিদ্রোহিনী
এস সুলতানা
( উৎস্বর্গ : বিউটি, তনু, আফসানা, সহ সকল ধর্ষিতা মা'বোন-কে)
ওরে নাগিনীরা তোরা কোথায়?
ঘর হতে তোরা বাইরে আয়।
আর কতো কাল নীরব রবি
এমনি জীবন বিলিয়ে যাবি?
ছুটে আয় ওরে ঝঞ্জার বেগে
কেন জীবন দিবি বল অনুরাগে!
হাতের খঞ্জর ঝনঝন বাজা
ঈশান কোণে দামা বাজা।
কিসের জন্য নীরব তোরা
করিস বলো কিসের ভয়?
আর কতোকাল এমনি বলো
করবি তোরা জীবন ক্ষয়?
ওরে সুশীল সমাজ ভিত্তিহীন
হতাশায় যায় আমাদের দিন।
তনু গেলো আফসানা গেলো
বিউটির প্রাণ একি ভাবে নিলো।
ভাগ্য কি শুধু এমনি রবে?
ধর্ষকের হাতে জীবন যাবে।?
সম্মান ভয়ে আর কতোকাল
ধুকে ধুকে তোরা কাঁদবি বল?
কত শত শত সাজান ঘর
প্রেম পরকিয়ায় হয় ছারখার
কেউ জানেনা পুরুষের ছলে
নারী ভাসে চোখের জলে।
ক্ষণে ক্ষণে নারী ধর্ষিত হয়
লোক লাজ ভয়ে নীরব রয়
স্বাধীন দেশের মাটিতে এসে
আজো ধর্ষনের মেলা বসে!
ওদের ধোষো কিসের দোষে?
ওরা ধর্ষিলো দেশের রোশে।
এ লজ্জা আমি কোথায় রাখি
কেমন করে লজ্জা ঢাকি?
হারে নিষ্ঠুর পরিবেশে
হারে আমার স্বাধীন দেশ।
তোরি জন্য দিলো নারী সম্ভ্রম
অকাতরে দিলো ভাই জীবন।
তবু কেন, তোর বুকে মাগো
ফুল কলিরা জীবন ত্যাগে?
সমাজ সমাজ সমাজ বলে
কন্যা রেখেছিস ঘর কোণে।
রুদ্ধদ্বার ভাঙরে রোষে
পিনাক পাণির মন্ত্র কষে।
দিকবালিকার পীতবাসে
আগুন জ্বালা চার পাশে।
ওঠ নাগিনী গর্জে ওঠ
উল্কা বেকে এবার ছোট।
হৃদয়টাকে শান্তে হবে
কালের ভাঙ্গন ভাঙতে হবে।
ওরে "কপট কোপের তূণ ধরি
ওঠ জেগে তুই সুন্দরী।"
ভাঙ্গরে বাঁধন ভাঙ্গরে এবার
"পাগলা গাজন উচ্ছ্বাসে"।
"কাঁপা ভূধর কাকন তরু
শিউলি শিথিল ভোর বেলা"
আয়রে ওরে কাল বোশেখী
সৃষ্টিটাকে উল্টাতে জীবনটাকে পাল্টাতে।
২৯ মার্চ ২০১৮
সময় ভোর ৫.২৫