১৯শতকের কিশোর কবি
পরাধীন ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে
সদ্য ভুমিষ্ট শিশুর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন....
"এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য
করে যাবো আমি,
নবজাতকের কাছে
এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"

কবির এই অঙ্গীকারের সাথে
অসংখ্যবার সুরে সুর মিলিয়েছি আমরাও।
সভ্যতার শিখরে পৌঁছে যাওয়া ভারতবর্ষ
স্বাধীনতার সাত দশকেও
পুঁজিবাদ আর স্বৈরাচারের
নাগপাশ থেকে মুক্তি পায়নি!
শতকোটি দেশবাসী আমরা
পারিনি কবির স্বপ্নকে বাস্তবায়ীত করতে।
এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য
করে তুলতে পারিনি আমরা আজো।
শিশুরা আজো পাচারকারীর অব্যর্থ নিশানায়।
শিশুরা আজো ধর্ষকদের শকুন দৃষ্টিতে।
আধুনিকতায় মোড়া সমাজব্যবস্থায় মা-বাবার দাম্পত্য-কলহের মাঝে অসহায় বিপন্ন শিশু!
দারিদ্র্য- অনাহার- অপুষ্টি- অশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত আজো অগুনতি শিশু।
অর্থনৈতিক বৈষম্যের সমাজে সস্তা দরের শ্রমিক শৈশবহারা দরিদ্র অসহায় শিশুরাই।

শিশুরা ভালো নেই!
ওদের চোখে অজানা ভয় আর অবিশ্বাস!
ওদের জন্য ক্রমশঃ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এ পৃথিবী।
আমরা অক্ষম! আমরা অধম! আমরা অপরাধী!
আমরা পারিনি এই পৃথিবীকে নবজাতকের বাসযোগ্য করে তুলতে!
আমরা পারিনি ভবিষ্যত নাগরিকের
যথার্থ নিরাপত্তা দিতে!
আমরা পারিনি ফুলের মতো
নিষ্পাপ শিশুদের মুখে নির্মল হাসি ফোটাতে!

এ আমাদের লজ্জা...
শতকোটি ভারতবাসীর লজ্জা...
এ মানব সমাজের লজ্জা!
সত্যিই কি আমরা ক্ষমার যোগ্য ???
সত্যিই কি আমরা সভ্য হয়েছি আজো!!
--------------------------------------
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা/ভারত)