রাজামশাই বললেন, রাম রাজত্বই তাঁর আদর্শ। রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠাই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য।
রাজ্যশুদ্ধ প্রজা তাঁর সন্তানতুল্য...
প্রজার ভালো-মন্দ ভাবেন রাজা,
সে তো বলাই বাহুল্য!
অতি সাহস দেখিয়ে যদি কেউ
শান্তিভঙ্গ করতে চায়...
শান্তি ভঙ্গকারীকে শাস্তি দেবেন
স্বয়ং রাজামশাই।
রাম-রাজত্বে রাজার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ!
সে তো সোনার পাথরবাটি!
গণতন্ত্র! সেটা আবার কি!
রামরাজত্বে ঐসব তন্ত্র-মন্ত্রর প্রয়োজনই বা কি!
প্রজা কেমন থাকবে, কি খাবে বা কতটা খাবে,
আদৌ খাবে কি না, কি করবে-- কোথায় যাবে ইত্যাদি বিষয়ে প্রজার পিতৃতুল্য রাজামশাই ছাড়া আর কে  ভাববে?
প্রেম নিবেদনের বিষয়ে সবাই কিন্তু সাবধান!
নইলে লাভ-জেহাদের অভিযোগে কঠোর শাস্তিবিধান।
রাজামশাই মহান! তিনি আদর্শবান।
তিনি আমজনতার অভিভাবকতুল্য...
রাজধর্মই তাঁর আদর্শ;
সে তো বলাই বাহুল্য!

রাজামশাই যাই করুন না কেন,
তা কেবল প্রজার ভালোর কথা ভেবেই করেন। প্রয়োজনে প্রজার মঙ্গলের জন্য ঘটি-বাটির সাথে রাজ্যটাও বেচে দিতে পারেন।
রাজ-আদর্শের কেউ বোঝে না মূল্য!
আহা! রাজামশাই প্রজাদের ভালো চান,
সে তো বলাই বাহুল্য!

এই যেমন মাসের পর মাস ধরে হাজার হাজার কৃষক আন্দোলনে সামিল হয়েছেন।
পৌষ-মাঘের হাড়-কাঁপানো শীতে কতই না কষ্ট সয়েছেন!
তাদের দাবি, কৃষি আইন তারা মানবেন না।
গত বছর প্রবল শীত সইতে না পেরে কত কৃষক প্রাণ হারালেন...
কেউ কেউ আত্মহত্যা করলেন!
কিন্তু তাতে কি!
সামান্য কৃষক-মজুরদের মৃত্যু মোটেই গুরুত্ব পায়!
কয়েকজন সাধারণ কৃষক মারা গেলে রাজার কিই বা আসে যায়!

রাজামশায়ের দয়ার শরীর, তিনি আদর্শবান! প্রজাবৎসল রাজা তিনি মহান!
যতই হোক তিনি রাজা!
তিনি ভাঙেন তবু...
যাকগে,সেতো রাজার মহানুভবতা।
রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠাই তাঁর একমাত্র এবং শেষ কথা।
অযথা কেউ গোল বাধালে তাকে রাজদ্রোহীতার অপরাধে গাড়ির তলায় পিষে দিতে পারেন-- জেলেও পুরে দিতে পারেন।
রাজামশাই কি কখনো প্রজাদের কাছে হারেন!
আন্দোলন না থামলে তিনি আরো কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেন।

নিন্দুকেরা যে যাই বলুক...
রামরাজত্ব যাঁর ধ্যানজ্ঞান,
দেশশুদ্ধ প্রজার মঙ্গল কামনা করেন যিনি আপ্রাণ।
যিনি প্রজার পিতাতুল্য...
যেনতেন প্রকারেন তিনি তাঁর রাজ্যে
শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইবেন....
সে তো বলাই বাহুল্য!
সে তো বলাই বাহুল্য!!
-------------------------------
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা/ভারত)